সিলেটে প্রবাসীদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ: চেয়ারম্যান শেরিনকে রিমান্ডে নিতে চায় সিআইডি
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৪০:৩৬,অপরাহ্ন ০১ অক্টোবর ২০২২
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
আবাসন ব্যবসার নামে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের করার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহববুল হক শেরিনকে রিমান্ডে নিতে চায় অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে তাকে শ্রীরামসিস্থ নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হলে ওইদিন আদালতে তোলা হয়। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রতারক চেয়ারম্যান শেরিনকে রিমান্ডে নিতে আদালতে আবেদন করেন।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সিআইডির সিলেট মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা।
তিনি বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তা বিজ্ঞ আদালতে রিমান্ড আবেদন করেছেন। এখনো শুনানি হয়নি। বিজ্ঞ আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করলে আমরা তাকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করবো।’
তিনি আরও বলেন- ‘এ মামলাসহ ৪ টি মামলা রয়েছে চেয়ারম্যান শেরিনের বিরুদ্ধে। অন্যান্য মামলা তদন্ত করতে আমরা প্রধান অফিসে অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছি। অনুমোদন পেলে আমরা অপর মামলাগুলো তদন্ত করবো।’
জানা যায়, নগরীর আম্বরখানা পয়েন্টের পাশেই আবাসন হাউজিং। ২০০৬ সাল থেকে ব্যস্ততম আম্বরখানা পয়েন্টের পাশে এ প্রকল্পের সাইনবোর্ড রয়েছে। সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমানকে দিয়ে উদ্বোধন করে এটির যাত্রা শুরু হয়েছিলো।
কোম্পানির প্রবাসী পরিচালকরা জানিয়েছেন- ইতিমধ্যে আবাসন এসোসিয়েট ও আবাসন ডেভেলপার কোম্পানির নামে মোট ৬৭ জনকে পরিচালক করা হয়েছে। এরমধ্যে আবাসন এসোসিয়েটে রয়েছেন ৩৭ জন। আর বাকিদের ডেভেলপার কোম্পানিতে পরিচালক করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় সবাই হচ্ছেন প্রবাসী বিনিয়োগকারী। আবাসনে ফ্ল্যাট কিংবা প্লটের লোভনীয় অফার দিয়ে তাদের কোম্পানির পরিচালক করা হয়।
প্রথম দিকে করা পরিচালকদের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা করে নেয়া হয়। পরবর্তীতে ২৫ লাখ টাকা এবং শেষ দিকে কারও কারও কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা নেয়া হয়েছে। বর্তমানে এ প্রকল্পের মধ্যে ৯৬ শতক ভূমি বিদ্যমান রয়েছে। এর বাইরে প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি নেই। বিভিন্ন সময় প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা এসে প্রকল্পের অগ্রগতিসহ নানা বিষয় নিয়ে চেয়ারম্যান শেরিন ও এমডি আব্দুল হামিদের কাছে জানতে চাইলে কোনো উত্তর পাননি।
চলতি বছরের বিভিন্ন সময় সিলেটের এয়ারপোর্ট থানায় চারজন প্রবাসী বিনিয়োগকারী আবাসন এসোসিয়েটের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শেরিন, এমডি নয়াসড়কের অপরূপা টাওয়ারের বাসিন্দা আব্দুল হামিদ, পরিচালক গোলাপগঞ্জের বাসিন্দা নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও হুমকির অভিযোগে মামলা করা হয়।
এসব মামলা এখনো তদন্তাধীন রয়েছেন।এ মামলাসহ এসএমপি’র এয়ারপোর্ট থানায় আরও ৩ টি প্রতারণার মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। মামলা দায়ের করার পর আসামি শেরিন বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদান করে যাচ্ছেন।
এসব অপরাধ করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে চেয়ারম্যান শেরিনকে গ্রেফতার করতে বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটায় জগন্নাথপুরের মিরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামসি গ্রামস্থ নিজ বাড়িতে অভিযান চালান অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-এর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নি.) শেখ মোহাম্মদ রুবেল ও পুলিশ পরিদর্শক (নি.) শাহ মুহাম্মদ মুবাশ্বির। এসময় নিজ বাড়ি থেকে চেয়ারম্যান শেরিনকে গ্রেফতার করা হয়।