চা শ্রমিকরা চরম খাদ্য সংকটে : সাথে এনজিওদের কিস্তি টাকার চাপ
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৫০:২৬,অপরাহ্ন ২০ আগস্ট ২০২২
স্বপন দেব, নিজস্ব প্রতিবেদক :
চলমান ১০ দিন কর্মবিরতির কারণে চা শ্রমিকদের মধ্যে এখন চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এর উপর বিভিন্ন এনজিওদের কিস্তি পরিশোধ না করতে পারায় দিশেহারা হয়ে পরেছেন শ্রমিক পরিবারগুলো। চা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি দৈনিক মজুরী ৩শত টাকা না পেলে তাঁরা কর্মবিরতি থেকে সরে আসবেনা বলে জানান চা শ্রমিক ও নের্তৃবৃন্দ।
কর্মবিরতীর দিন যতো গড়াচ্ছে প্রচন্ড বিক্ষোভ ও ক্ষোভে ফুঁসে উঠছেন চা শ্রমিকরা। মজুরী বৃদ্ধির দাবিতে তাঁদের আন্দোলন ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। আন্দোলনরত শ্রমিকরা ¯েøাগান দিচ্ছে মালিক পক্ষের দালালরা হুসিয়ার সাবধান, চা শ্রমিকের দালালরা হুসিয়ার, সাবধান। ১৪৫ টাকা মজুরী মানবোনা, মানবোনা ।
শনিবার দুপুর শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা বাগানে একই দৃশ্য দেখা যায়। গত রোববার সাপ্তাহিক ছুটি, সোমবার শোক দিবস ও শুক্রবার শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমি বাদ দিলে ২ ঘন্টা কর্মবিরতি ও পূর্নদিবস কর্মবিরতি মিলে আজ শনিবার ১০ দিনে পড়েছে তাঁদের এই কর্মবিরতি।
ভাড়াউড়া বাগানের শকুন্তলা, দীপালি, পরমেশ্বর সংবাদকর্মীদের জানান, তাদের সাপ্তাহিক রেশন, প্রতিদিনের খাদ্য সংকট, চিকিৎসা সংকটসহ বিভিন্ন সংকট দেখা দিয়েছে।
এছাড়া ব্র্যাক, আশা, হিড, ব্যুরো বাংলাদেশ, উদ্দীপন, এফআইডিবিসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে চাপ দিচ্ছে। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন চা শ্রমিকরা। এঅবস্থায় তাঁরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্রæত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এদিকে যেসব চা শ্রমিকের কাছে জমানো টাকা নেই তারা পড়েছেন চরম কষ্টে। ঘরে কোন খাদ্য নেই। একবেলা খেলে আরেক বেলা খেতে পারছেন না। আন্দোলন করতে গিয়ে এখন অভুক্ত থাকতে হচ্ছে অনেককে।
চা বাগানের মেরী ভুইয়া বলেন, এফআইভিডিবি থেকে ১০ হাজার টাকা কিস্তি নিয়েছিলাম। সপ্তাহে সাড়ে তিনশ, টাকা কিস্তি দিতে হয়। এখন কাজ নাই কিভাবে কিস্তির টাকা দিব। অপর শ্রমিক লক্ষী বুনার্জি জানান, আমি এফ আইভিডিবি থেকে ২০ হাজার টাকা কিস্তি নিয়েছি। সপ্তাহে সাড়ে ৫শ’ টাকা কিস্তি দিতে হচ্ছে। ফলে চোখে মারাত্মক দুঃশ্চিন্তায় আছি। কিভাবে খাব,আর কিভাবে কিস্তির টাকা দিব? একই অবস্থা বাগানের অনেক শ্রমিকের।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের মানবিক দিক বিবেচনা করে আরো ৫ টাকা মজুরী বৃদ্ধি করতে বলেছেন। আমি আজ বিকেলে চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও মালিক পক্ষের প্রতিনিধি নিয়ে বৈঠক করে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবটি জানাবো। আশা করি চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করবেন বলে জেলা প্রশাসক আশাবাদ প্রকাশ করেন।