মেয়র আরিফের বাগান বাড়িতে সিসিক কর্মীর অপমৃত্যু, দায় কার?
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:৪৯:১২,অপরাহ্ন ১৪ আগস্ট ২০২২
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেট নগরীর সীমানা শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। সিলেট নগরীর পাঠানটুলা হয়ে তারাপুর বাগান পেরিয়ে আরও ভেতরে। জায়গাটার নাম ভাটা।
রাস্তা দিয়ে গাড়ি খুব একটা চলে না। নগর থেকে অনেক দূরে হলেও ধুলো উড়িয়ে মাঝে মাঝেই এ রাস্তা দিয়ে আসে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর গাড়ি। কারণ এখানেই ছোট টিলার উপরে তার বাগানবাড়ি। পুুরোটাই দেয়াল দিয়ে ঘেরা।
এখানে তিনি গবাদি পশুর খামারও গড়ে তুলেছেন। এখানে তাই তার আসা যাওয়া। তিনি আসেন, তার পরিবারের সদস্যরাও আসেন। আসেন সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারাও, আর আসেন বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরাও। কর্মকর্তারা বাগানাবাড়ির উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সহয়াতা করেন পরামর্শ দেন। আর কর্মীরা বাগানবাড়ির ‘টুকটাক’ কাজ করে দেন।
বাগানবাড়িতে এমনই টুকটাক কাজ করছিলেন ভাটা এলাকারই নজরুল ইসলামের ছেলে রাহুল আহমদ। তিনি সিসিকের বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মী। মেয়রের ডাকে রাহুল তার বাগানবাড়িতে কাজ করছিলেন। সোমবার বিকেলে কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। তাকে ভর্তি করা হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মৃত্যু হয় রাহুল আহমদের। ২২ বছর বয়সী রাহুল ভাটা এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে। রাহুল আহমদ সম্প্রতি বিয়ে করেছিলেন, তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা।
আরিফুল হক চৌধুরীর বাগানবাড়িতে সিটি কর্পোরেশনের কর্মীদের কাজে লাগানোর অভিযোগ অনেক পুরনো। অভিযোগ আছে সিটি কর্পোরেশনের যানবাহন-যন্ত্রপাাতি ব্যবহারেরও। এমনও অভিযোগ আছে, উন্নয়ন-খোঁড়াখুঁড়িতে পাওয়া মাটি-কংক্রিটের একটি বড় অংশ বাগানবাড়ির উন্নয়নকাজে ব্যবহৃত। তবে বারবারই এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয় সিসিকের পক্ষ থেকে। তবে রাহুলের মৃত্যুর ঘটনাটি অস্বীকারের উপায় নেই। কথা হয় সিসিকের বিদ্যুৎ শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আলমের সাথে।
তিনি জানালেন মেয়রের বাগানবাড়িতে কাজ করতে গিয়েই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন রাহুল। ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার তার মৃত্যু হয়েছে। সিসিকের আওতাধীন এলাকা না হওয়্রা পরও রাহুল সেখানে কেন কাজ করছিলেন এমন প্রশ্নে এ কর্মকর্তা বলেন, মেয়র যদি আমাদের কাছে টুকটাক কাজের জন্য সাহায্য চান আমরা কী করে না করতে পারি?
রাহুল আহমদের মৃত্যুর ঘটনায় শনিবার রাতে এয়ারপোর্ট থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়েরের জন্য এজাহার জমা দিয়েছেন তার বাবা নজরুল ইসলাম। এমনটি জানালেন থানার এসআই গৌতম চন্দ্র দাস।
রাহুল আহমদের ভগ্নিপতি বদর আহমদ জানান, শনিবার আসরের নামাজের পর রাহুলে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। জানাজায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট প্রতিদিন