আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসাই পরকালীন মুক্তির পথ
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৫৬:৪৪,অপরাহ্ন ০৪ আগস্ট ২০২২
শুহাদায়ে কারবালা কে কেন্দ্র করে মুসলমানরা আজ দু দলে বিভক্ত। কিছু নামধারী মুসলমান কুখ্যাত ইয়াযিদের অনুসরণ করে মুসলমানদের মধ্যে ফিৎনা সৃষ্টি করছে। তাদের ফিৎনা থেকে আমাদের ইমান কে সঠিক রাখতে হলে আহলে বায়তের মহব্বত, অনুসরণ, অনুকরণ করতে হবে। আবার আহলে বায়তের মহব্বতের নামে অতিরঞ্জিত কিছু করা যাবেনা যা ভ্রান্ত আকিদা পন্থি শিয়ারা করে থাকে। কারণ আহলে বায়তের প্রতি মহব্বত রাখা এবং তাদের অনুসরণ করার জন্য হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কে নির্দেশ দিয়েছেন। আলোচ্য প্রবন্ধে আমরা কুরআন হাদিসের আলোকে আহলে বায়তের মর্যাদা ও তাঁদের অনুসরণের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করবো।
আহলে বায়তের পরিচয়ঃ
قَالَتْ عَائِشَةُ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم غَدَاةً وَعَلَيْهِ مِرْطٌ مُرَحَّلٌ مِنْ شَعْرٍ أَسْوَدَ فَجَاءَ الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ فَأَدْخَلَهُ ثُمَّ جَاءَ الْحُسَيْنُ فَدَخَلَ مَعَهُ ثُمَّ جَاءَتْ فَاطِمَةُ فَأَدْخَلَهَا ثُمَّ جَاءَ عَلِيٌّ فَأَدْخَلَهُ ثُمَّ قَالَ { إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا}
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকালে বের হলেন। তাঁর গায়ে ছিলো কালো পশম দ্বারা খচিত একটি পশমী চাঁদর। হাসান ইবনু আলী (রাঃ) এলেন, তিনি তাঁকে চাঁদরের ভেতর ঢুকিয়ে নিলেন। হুসায়ন ইবনু আলী (রাঃ) এলেন, তিনিও তার সঙ্গে (চাদরে) ঢুকে পড়লেন। ফাতিমা (রাঃ) এলেন, তাকেও ভেতরে ঢুকিয়ে ফেললেন। অতঃপর আলী (রাঃ) এলেন, তাঁকেও ভেতরে ঢুকিয়ে নিলেন। পরে বললেনঃ হে আহলে বাইত! আল্লাহ তাআলা তোমাদের থেকে অপবিত্রতাকে বিদুরিত করে তোমাদের অতিশয় পবিত্রময় করতে চান।
সুনানে তিরমযীতে এসেছে
عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ، رَبِيبِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلمَّ : ( إنمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا ) فِي بَيْتِ أُمِّ سَلَمَةَ فَدَعَا فَاطِمَةَ وَحَسَنًا وَحُسَيْنًا فَجَلَّلَهُمْ بِكِسَاءٍ وَعَلِيٌّ خَلْفَ ظَهْرِهِ فَجَلَّلَهُمْ بِكِسَاءٍ ثُمَّ قَالَ ” اللَّهُمَّ هَؤُلاَءِ أَهْلُ بَيْتِي فَأَذْهِبْ عَنْهُمُ الرِّجْسَ وَطَهِّرْهُمْ تَطْهِيرًا ” . قَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ وَأَنَا مَعَهُمْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ قَالَ ” أَنْتِ عَلَى مَكَانِكِ وَأَنْتِ عَلَى خَيْرٍ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ عَطَاءٍ عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ
উমার ইবনু আবী সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আশ্রয়ে লালিত পালিত হন। তিনি বলেন, উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর ঘরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল (অনুবাদ) “আল্লাহ তা’আলা তো চান আহলে বাইত হতে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে”– (সূরা আহযাবঃ ৩৩), তখন তিনি ফাতিমাহ, হাসান ও হুসাইন (রাঃ)-কে ডাকলেন এবং তাদেরকে একটি কম্বলের ভিতর ঢেকে নিলেন। রাযিঃ) তার পিছনে ছিলেন। তিনি তাকেও কম্বলের ভিতর নিয়ে নিলেন। তারপর তিনি বললেনঃ “হে আল্লাহ! এরা আমার আহলে বাইত’ (পরিবারের সদস্য)। তুমি তাদের ভিতর হতে অপরিচ্ছন্নতা দূর করে দাও এবং সম্পূর্ণরূপে পরিচ্ছন্ন করে দাও।” উম্মু সালামাহ (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর নাবী! আমিও কি তাদের অন্তর্ভুক্ত? তিনি বললেনঃ তুমি স্ব-স্থানে থাক এবং তুমি কল্যাণের মধ্যেই আছ।
আহলে বায়তের অনুসরণের তাগিদঃ
عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالاَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنِّي تَارِكٌ فِيكُمْ مَا إِنْ تَمَسَّكْتُمْ بِهِ لَنْ تَضِلُّوا بَعْدِي أَحَدُهُمَا أَعْظَمُ مِنَ الآخَرِ كِتَابُ اللَّهِ حَبْلٌ مَمْدُودٌ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الأَرْضِ وَعِتْرَتِي أَهْلُ بَيْتِي وَلَنْ يَتَفَرَّقَا حَتَّى يَرِدَا عَلَىَّ الْحَوْضَ فَانْظُرُوا كَيْفَ تَخْلُفُونِي فِيهِمَا ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
যাইদ ইবনু আরকাম (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে আমি এমন জিনিস রেখে গেলাম যা তোমরা শক্তরূপে ধারণ (অনুসরণ) করলে আমার পরে কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। তার একটি অন্যটির তুলনায় বেশি মর্যাদাপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণঃ আল্লাহ তা’আলার কিতাব যা আকাশ হতে মাটি পর্যন্ত দীর্ঘ এক রশি এবং আমার পরিবার অর্থাৎ আমার আহলে বাইত। এ দুটি কখনও আলাদা হবে না কাওসার নামক ঝর্ণায় আমার সঙ্গে একত্রিত না হওয়া পর্যন্ত। অতএব তোমরা লক্ষ্য কর আমার পরে দু’জনের সঙ্গে তোমরা কিভাবে আচরণ কর।
আহলে বায়তের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-
عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَحِبُّوا اللَّهَ لِمَا يَغْذُوكُمْ مِنْ نِعَمِهِ وَأَحِبُّونِي بِحُبِّ اللَّهِ وَأَحِبُّوا أَهْلَ بَيْتِي لِحُبِّي ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ
.
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আল্লাহ তা’আলাকে মহব্বত কর। কেননা তিনি তোমাদেরকে তার নিয়ামাতরাজি খাবার খাওয়াচ্ছেন। আর আল্লাহ্ তা’আলার মহব্বতে তোমরা আমাকেও মহব্বত এবং আমার মহব্বতে আমার আহলে বাইতকেও মহব্বত কর।
হযরত আলী (রাঃ) বর্ণনা করেন, হযরত রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হাসান – হোসাইন এর হাত ধরে বললেন, যে ব্যাক্তি আমাকে এবং এই দু’জনকে ( হাসান ও হোসাইন ) কে ভালবাসবে সাথে সাথে তাঁদের পিতা- মাতাকে ( হযরত আলী ও হযরত ফাতেমা ) কে ভালবাসবে সে কিয়ামতে দিবসে আমার সাথেই থাকবে। (তিরমিযী)
মুসলমানদের প্রতি নবীজির ঘোষণাঃ
মুসলিম স্বীয় সহীহ গ্রন্থে যায়েদ ইবনে আরকাম হতে বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) একদিন মদিনা ও মক্কার মধ্যবর্তী স্থলে “খুম নামক একটি জলাশয়ের কাছে খোতবা দান করেন। উক্ত খোতবায় তিনি আল্লাহর প্রশংসার পর লোকদেরকে নসিহত করে বলেন:
ألا أيّها الناس، فانّما أنا بشرٌ يوشک أن يأتی رسول ربّی فأجيب، و أنا تارکت فيکم ثقلين: أولهما کتاب الله فيه الهدی و النور، فخذوا بکتاب الله و استمسکوا به -فحث علی کتاب الله و رغّب فيه ثم قال: – و أهل بيتی، أذکرکم الله في أهل بيتی، أذکرکم الله فی اهل بيتی، أذکرکم الله فی اهل بيتی
হে লোকসকল! আমি একজন মানুষ। খুব শিগগিরি আমার প্রভুর নিযুক্ত ব্যক্তি (তথা মৃত্যুর ফেরেশতা) আমার কাছে আসবে এবং আমিও তাঁর আহ্বানে সাড়া দেব। আমি তোমাদের মাঝে দু’টি অতি মূল্যবান জিনিস রেখে যাচ্ছি; যার একটি হল আল্লাহর কিতাব; যাতে রয়েছে নূর এবং হেদায়েত। আল্লাহর কিতাবকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধর। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর কিতাবের উপর আমল করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে অত:পর বলেন: আর অপরটি হলো আমার আহলে বাইত। আমার আহলে বাইতের বিষয়ে তোমাদেরকে মহান আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি (অর্থাৎ মহান আল্লাহকে ভয় করে তাদেরকে অনুসরণ কর) এই বাক্যটিকে তিনি তিনবার উচ্চারণ করেন। সূত্র: সহীহ মুসলিম,
নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) এর প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবুজার আল গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, আমার আহলে বাইত-এর সদস্যগণ [ আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন আঃ ] আমার উম্মতের জন্য তেমনি নাজাতের তরী, যেমনি আল্লাহ্র নবী নুহ (আঃ)-এর তরী মহাপ্রলয়ের সময় তার জাতির জন্য আশ্রয় ও নাজাতের তরী ছিলো। অর্থাৎ যারাই হযরত নুহ (আঃ)-এর তরীতে উঠেছিল তারাই মহাপ্রলয় থেকে নাজাত পেয়েছিল ( হযরত নুহ (আঃ) এর ছেলে তরীতে উঠেনি আল্লাহ তাকেও ক্ষমা করেন নি ) তেমনি এই উম্মতের যারা আমার আহলে বাইত কে অনুসরন করবে তারাই নাজাত পাবে এবং যারা অনুসরন করবে না তারা সুস্পষ্ট পথভ্রষ্ট ( জাহান্নামী ) হবে। উক্ত হাদিস থেকে স্পষ্ট হলো যারা আহলে বায়তের সমালোচনা করবে এবং আহলে বায়তের সদস্য ইমাম হোসাইন (রাঃ) এর বিরোধিতা করবে তারাই পথভ্রষ্ট।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও আহলে বায়তের প্রতি দুরুদঃ
بي اَنتَ وَ اُمّي يا رَسُولَ الله إنّي لَأرَي السُّرُورَفي وَجهِکَ , قالَ أتاني جبرئيلُ آفاً فقالَ: يا مُحمّد ! مَن صَلّي عَلَيکَ مَرَّ ةً کَتَبَ اللهُ بِها عَشرَ حَسَناتٍ وَ مَحي عَنهُ عَشرَ سَيِّئاتٍ وَرَ فَعَ لَهُ بِها عَشرَ دَرَجاتٍ
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) প্রবেশ করলে আবু তালহা তাঁর নিকট দ্রুত পৌঁছলেম এবং তাঁকে অভ্যর্থনা জানালেন এবং বললেন ‘আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গ হোক হে আল্লাহর রাসূল ! আপনার চেহারা আনন্দিত দেখতে পাচ্ছি। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেন, জিব্রাইল সবেমাত্র আমার নিকট এসেছিলেন ও বললেন, হে মুহাম্মাদ ! যে কেউ একবার আপনার উপর দূরুদ পড়ে মহান আল্লাহ তাকে দশটি হাসানাহ পুরস্কার দেন, দশটি অপকৃম ও বদ থেকে তাকে মুক্ত করেন এবং তাকে দশ ধাপ উপরে তুলেন। [কানযুল উম্মা)
আহলে বায়তের প্রতি ভালোবাসার প্রতিদানঃ
হুজুর পাক [ﷺ] বলেছেন, “কিয়ামতের দিন এক দল লোককে অত্যন্ত চমৎকার ও সম্মানিত অবস্থায় দেখা যাবে। তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তারা ফেরেস্তা বা নবী কিনা? উত্তরে তারা বলবেন, আমরা ফেরেস্তাও নই নবীও নই, বরং মোহাম্মদ [ﷺ]-এঁর উম্মতের মধ্যে অভাবী লোক। তখন তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে, তাহলে কিভাবে তোমরা এত উচ্চ মর্যাদা লাভ করলে? উত্তরে তাঁরা বলবে, আমরা খুব বেশি আমল করিনি এমনকি পুরো বছর রোজাও রাখিনি এবং পুরো রাত্রি ইবাদতেও কাটাইনি। তবে আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করতাম এবং মোহাম্মদ [ﷺ] ও তাঁর আহলে বাইতের সদস্যগণের নাম শুনলে তাঁদের উপর দূরুদ পাঠ করতাম। আর তাঁদের দুঃখের কথা শুনলে আমাদের গালগড়িয়ে অশ্রু প্রবাহিত হত। [মুসতাদারক আলাস সাহীহাইন]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হযরত ফাতেমাকে বলেন যে, “কিয়ামতের দিন তুমি নারীদের জন্য শাফায়াত করবে এবং আমি পুরুষদের জন্য শাফায়াত করবো; যারা ইমাম হুসাইনের দুঃখে ক্রন্দনকারী প্রত্যেক ব্যক্তিকে আমরা হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ করাবো। [বিহারুল আনওয়ার]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “সমস্ত চোখ কিয়ামতের দিন কাঁদতে থাকবে, নিশ্চয়ই কেবল সেই চোখ ছাড়া, যা ইমাম হুসাইনের বিয়োগান্ত ঘটনায় কেঁদেছে, ঐ চোখ সেই দিন হাসতে থাকবে এবং তাকে জান্নাতের নিয়ামতসমূহের সুসংবাদ প্রদান করা হবে। [বিহারুল আনওয়ার]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “নিশ্চয়ই প্রত্যেক মুমিনের হৃদয়ের ইমাম হোসাইন-এর শাহাদাতের বিষয়ে এমন ভালোবাসার উত্তাপ রয়েছে যা কখনো শীতল হওয়ার নয়। [মুস্তাদারক আল ওয়াসাইল]
আহলে বায়তের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ কারীর পরিণামঃ
হাদীছ শরীফের মধ্যে এসেছে,
عن حضرت جابر بن عبد الله الانصاري رضى الله تعالى عنه قال خطبنا رسول الله صلى الله عليه و سلم فسمعته وهو يقول يا أيها الناس من أبغضنا اهل البيت حشره الله يوم القيامة يهوديا فقلت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم وان صام وصلى قال وان صام وصلى وزعم انه مسلم.
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবা দিলেন এবং বলতে থাকলেন যে, হে লোক সকল! যারা আমার আহলে বাইতের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলো, তাঁদের বিরোধিতা করলো, তাদের হাশর-নশর হবে ইহুদী হিসেবে। আমি আরজ করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! যদিও তারা রোযা রাখে এবং নামায পড়ে? উত্তরে তিনি ইরশাদ করলেন, হ্যাঁ! যদিও তারা রোযা রাখে, নামায পড়ে এবং দাবি করে যে, তারা মুসলমান।
তাই আসুন আমরা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পরিবার তথা আহলে বায়তের প্রতি মহব্বত রেখে ইমাম হোসাইন (রাঃ) এর আদর্শ কে বুকে লালন করে সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করি।