আল কায়েদা নেতা জাওয়াহিরি হত্যায় বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া, তালেবানের নিন্দা
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৩৮:২১,অপরাহ্ন ০২ আগস্ট ২০২২
আল কায়েদার শীর্ষ নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরি হত্যায় বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকার এ ইস্যুতে বিবৃতি দিয়েছে। তারা বলেছে, তার মৃত্যুতে বিশ্ব নিরাপদ হলো। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ড্রোন হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করেছে। এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে দেশটিতে ক্ষমতায় থাকা তালেবানরা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
এর আগে ২০১১ সালে আল কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেনকে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের অদূরে অ্যাবোটাবাদে অভিযান চালিয়ে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্রের নেভি সিল’রা। তারপর আল কায়েদার হাল ধরেন মিশরে জন্ম নেয়া জাওয়াহিরি। ওসামা বিন লাদেনের পর তাকেও করলো যুক্তরাষ্ট্র। এই হত্যাকে দেখা হচ্ছে আল কায়েদার ওপর সবচেয়ে বড় আঘাত হিসেবে।
তাকে হত্যার পর সোমবার টেলিভিশনে ভাষণ দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এতে তিনি জাওয়াহিরিকে হত্যার ঘোষণা দেন। বলেন, অপারেশনের মাধ্যমে ন্যায়বিচার করা হয়েছে। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলায় যেসব মানুষ নিহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের কাছে এটা হবে কিছুটা স্বস্তির। জো বাইডেন বলেন, ন্যায়বিচার করা হয়েছে। এই সন্ত্রাসী নেতা আর নেই। এই অপারেশন সম্পন্ন করতে কতটা সময় লেগেছে, তা কোনো বিষয় নয়। আপনি কোথায় লুকিয়ে থাকবেন, তাও কোনো বিষয় নয়। যদি আপনি আমাদের জনগণের জন্য হুমকি হন, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র আপনাকে খুঁজে বের করবে। ব্যবস্থা নেবে।
ওদিকে টুইটারে পোস্ট দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি বলেছেন, আল জাওয়াহিরির মৃত্যু বিশ্বকে নিরাপদ করেছে। আয়মান আল জাওয়াহিরির মৃত্যু নিরাপদ বিশ্বের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়া। সন্ত্রাসী হুমকি মোকাবিলা, শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে যাবে কানাডা। এতে দেশে এবং বিশ্বজুড়ে মানুষ নিরাপদ থাকবে।
অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে বক্তব্য রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ। অনেক হামলার জন্য আল জাওয়াহিরিকে অভিযুক্ত করা হয়। এমন হামলার তালিকা প্রকাশ করেন তিনি। ২০০১ সালের সন্ত্রাসী হামলা ও অন্যান্য হামলায় নিহতদের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, বহু মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। তখন থেকেই রক্তপাত হয়েছে। এর মধ্যে আফগানিস্তানে যেসব অস্ট্রেলিয়ান দায়িত্ব পালন করেছেন, আত্মউৎসর্গ করেছেন এবং প্রাণ দিয়েছেন তারা আছেন। দুই দশক ধরে নিজের অপরাধের পরিণতি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল এই ব্যক্তি। সব ভিকটিমের প্রিয়জনদের সবার প্রতি আমাদের সহমর্মিতা জানাচ্ছি।
সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সাউদ বলেছেন, সন্ত্রাসী নেতাদের অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হতো আল জাওয়াহিরিকে। যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবে হায়েনার মতো সন্ত্রাসী অপারেশন পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতেন এই নেতা।
প্রায় এক বছর আগে আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করেছে তালেবানরা। কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা সম্পর্কে নিশ্চিত করেছে তারা। তবে কাকে টার্গেট করা হয়েছিল, সে বিষয়ে তারা কোনো নাম প্রকাশ করেনি। এ হামলার কড়া নিন্দা করেছেন তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ। বলেছেন, এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নীতি লঙ্ঘন করা হয়েছে।