ওসমানীনগর ট্রাজেডি: দেশে আসার কথা গোপন রাখতে বলেছিলেন নিহত রফিকুল!
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:১৭:৪১,অপরাহ্ন ২৮ জুলাই ২০২২
জুবেল আহমেদঃ
সিলেটের ওসমানীনগরে চাঞ্চল্যকর দুই লন্ডনির মৃত্যু নিয়ে এখনো খোলেনি রহস্যের জট। তবে নানামুখী তদন্তে নেমেছে পুলিশ। সঙ্গে রয়েছে একাধিক সংস্থাও। এ ঘটনায় নিহতের স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমদ বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে ওসমানীনগরের তাজপুরের স্কুল রোডের বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় এক পরিবারের ৫ সদস্যকে উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে মারা যান প্রবাসী রফিকুল ইসলাম ও ছেলে মাইকুল ইসলাম। রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুসনেআরা বেগম ও ছেলে সাদিকুল ইসলামের শারীরিক অবস্থা ভাল রয়েছে তবে নিহত রফিকুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে সামিরা ইসলামের অবস্থা আশংকাজনক অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে সাত-আট কিলোমিটার দূরে বড় ধিরারাই গ্রামে বাড়ি হলেও পরিবার নিয়ে রফিকুল ভাড়া বাসায় উঠেছিলেন। ভাড়া বাসায় তাঁর শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক, শ্যালকের স্ত্রী ও তাঁদের শিশুসন্তানও ছিল। এ নিয়ে এলাকায় চলছে নানা বিশ্লেষন।
বুধবার নিহত রফিকুলের শ্বশুর বাড়ি গেলে সাংবাদিকদের সাথে কথা হয় শ্বশুর আনফর আলীর। কান্নাজড়িত কন্ঠে আনফর আলী জানান, রাতে তার মেয়ে, জামাই, দুই নাতি ও এক নাতনি সহ ৫ জনই ভাত খাননি। তারা বাজার থেকে আনা বার্গার এবং লন্ডন থেকে আনা জুস জাতীয় খাবার খেয়েছেন। আর তাদের পরিবারের ৫ জনই রান্না করা ভাত খেয়েছেন। পরদিন চক্ষু হাসপাতালে যাওয়ার জন্য রাত ১০টার মধ্যে সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন সকাল ৮টার দিকে তিনি বাড়িতে চলে আসেন। সকাল ১০ টার দিকে ছেলে দেলোয়ার মিয়া তাকে ফোনে ঘটনাটি জানান এবং তিনি পুলিশকে বিষয়টি জানানোর জন্য বলেন। আনফর আলী আরো বলেন, নিহত রফিকুল ইসলাম তাকে দেশে আসার কথা কাউকে না জানাতে অনুরোধ করেছিলেন। পাশাপাশি কোথায় থাকবেন, তাও কাউকে না জানাতে বলেছিলেন। আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করার ব্যাপারেও তিনি তেমন আগ্রহী ছিলেন না। লন্ডনে রফিকুলের সঙ্গে ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর দ্বন্দ্ব ছিল বলেও দাবি করেন আনফর আলী।
এদিকে গতকাল রফিকুল ইলামের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর ভিটায় কোনো ঘরবাড়ি নেই। তবে তাঁর চাচাতো ভাই প্রবাসী বাবরু মিয়া ও মোতাহার আলী জামালের বসতঘর রয়েছে। এ সময় মোতাহার আলী জামাল জানান, তারা অনেক বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। কারো সাথে কোন মনোমালিন্য নেই। এই ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।