বড়লেখায় পিতার একাধিক বিয়ে লজ্জায় ছেলের আত্মহত্যা
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৩১:৩৬,অপরাহ্ন ২৬ জুলাই ২০২২
বড়লেখায় পিতার বহুবিবাহ ও নানা অপকর্মের কারণে লজ্জায় পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিয়েছে অভাগা ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিকী (১৫)। ছেলেটির বাবা নাজিম উদ্দিন গত ২৪ জুন তার ছেলে অপমৃত্যু হয়েছে একারণ দেখিয়ে বড়লেখা থানায় ইউডি মামলা করেন। আর নিজেকে বাঁচাতে ঘটনার ১০ দিন পর বড়লেখা জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালতে স্ত্রী, শালাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ছেলে হত্যার অভিযোগ করে। বিজ্ঞ মাজিস্ট্রেট জিয়াউল হক নিহতের ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী নির্দেশনা দিবেন এই মর্মে আদেশ দেন।
উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের সুয়ারারতল এলাকাবাসী জানান, নিহত কিশোর আবু বক্কর সিদ্দিকী (১৫) খুবি একটা লাজুক ছেলে ছিলো। তার পিতা তার মাকে বিয়ে করার আগে আরও ৩ টি বিয়ে করেন নিহত আবু বক্কর সিদ্দিকীর মা তার পিতার ৪ নম্বর স্ত্রী ছিলেন। তার পিতা মোঃ নাজিম উদ্দিন প্রায় ৬ মাস পূর্বে বড়লেখা উপজেলার জহুদনগর এলাকার বলাই মিয়ার মেয়ে রহিমা বেগমকে বিবাহ করেন, নাজিম পঞ্চম বিবাহের পর থেকে নববধূ নিয়ে জোটবদ্ধ হয়ে শারীরিক নির্যাতন চালান নিহত আবু বক্কর সিদ্দিকীর মা শেফা বেগমের উপর। শেফা বাধ্য হয়ে বড়লেখা জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালতে স্বামী ও সতিনের উপর অভিযোগে সি আর ১৪৭/২২ মামলা করেন। মায়ের মামলার প্রধান সাক্ষী ছিলো নিহত আবু বক্কর সিদ্দিকী।
নিহত আবু বক্করের ভাই আবু হানিফ( ১৪) বোন রাশেদা (১০) সাবেক ইউ পি সদস্য আব্দুর রহিম, কুতুব উদ্দিন, সাবেক ইউ পি সদস্য নুর উদ্দিনসহ অনেকে জানান- মা শেফা বেগম মামলা করলেও নিহত আবু বক্কর সিদ্দিকী পিতার আকুতি, মিনতিতে সাড়া দিয়ে পিতার পক্ষে কোর্টে গিয়ে সাফাই সাক্ষী দেয়।
তবে লাজোক আবু বক্কর সিদ্দিকী লোকলজ্জায় পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে বিষ পান করে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে প্রায় ২ দিন পর মারা যায়। গত মাসের ২২ জুন রাত আনুমানিক ১১টায় বিষ খেয়ে বাড়ির বাহিত থেকে এসে মা ছোট ভাই বোনকে ডাকে ও অনেক বমি করে। পরে তার মা শেফা বেগমসহ অন্যরা নিহত আবু বক্কর সিদ্দিকীকে তেতুল সহ অনেক কিছু খাওয়ান। তার পিতা মোঃ নাজিম উদ্দীন খবর পেয়ে আসেন গভীর রাত হওয়ায় নিহত আবু বক্কর সিদ্দিকীকে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পরের দিন তার পিতা মাতা আতœীয় স্বজন বিয়ানীবাজার ক্লিনিকে নিয়ে যান সেখানে কয়েক ঘন্টা থাকার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু বক্কর সিদ্দিকীকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া কথা বলেন পথে সে মারা যায়। এ ব্যাপারে আবু বক্কর সিদ্দিকীর পিতা নাজিম উদ্দীন বড়লেখা থানায় একটি অপমৃত্যুর অভিযোগ করেন। এলাকায় যখন পিতার বিয়ে মাকে নির্যাতন সহ নানা অপকর্মে ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিকী বিষ খেয়ে মৃত্যু বরণ করেছে এখবরে এলাকায় তোলপাড় হচ্ছে। তখন নিহতের ১০ দিন পর নিজেকে বাঁচতে আবু বক্কর সিদ্দিকী মা শেফা বেগম, মামা রুবেল আহমদ সহ সাবুল আহমেদকে আসামি করে কোর্টে একটি অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে নির্যাতন ও যৌতুক মামলার বাদী শেফা বেগম জানান, আমার সতিন ও স্বামীর নির্যাতনে আমি অতিষ্ট। আর ছেলে মেয়ে মানুষের কাছে মুখ দেখাতে পারছে না। তার পিতার কারনে আমার ছেলে মারা গেলো ছেলে মৃত্যুর সুখ কেটে উঠতে পারি নাই, আমার উপর মামলা দিয়ে এখন চাপ দিচ্ছে আমার করা নির্যাতন মামলা তুলে আনার জন্য।