প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে এলেও বাধা দেবো না
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ জুলাই ২০২২, ১২:৫৪ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে আসে আসুক। আমি তো বলে দিয়েছি তারা (বিএনপি) যদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে আসে, পুলিশ যেন বাধা না দেয়। আসুক না হেঁটে হেঁটে যতদূর আসতে পারে। কোনো আপত্তি নেই। আমি বসাবো, চা খাওয়াবো। কথা বলতে চাইলে শুনবো। কারণ আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। তবে যদি বোমাবাজি ও ভাঙচুর করে বাধা দেবো, উপযুক্ত জবাব দেবো। কিন্তু গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কোনো বাধা নেই।
গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের যৌথসভায় প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় দেশের জনগণের ভোটের অধিকারে বিশ্বাসী।
সেজন্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে যতটা উন্নতি হয়েছে, সেটা আওয়ামী লীগের আমলেই হয়েছে। আমরা দলের পক্ষ থেকে মহাজোটের পক্ষ থেকে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। শুধু তাই না ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, যাতে সিল মেরে বাক্স ভরতে না পারে। সেটার দাবি করেছিলাম। তিনি বলেন, কিছু লোক সারাক্ষণ দোষ ধরা, খুঁত ধরার চেষ্টায় থাকে। আমরা বিদ্যুতের লোডশেডিং দিচ্ছি কারণ ডিজেলের দাম বেড়ে গেছে। এলএনজির দামসহ প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে গেছে।
যে জার্মানি সুর তুলেছিল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করা যাবে না। তারা কিন্তু আবার সেটাই ফেরত গেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব ও তুর্কি প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের উদ্যোগ বিশেষ করে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগের ফলে এখন ইউক্রেন এবং রাশিয়া একটি চুক্তি করেছে। সার, খাদ্যদ্রব্য এগুলো যেতে দেবে। কৃষ্ণ সাগরে যে বন্দর বন্ধ রয়েছে, সেটাতে চলাচলের সুযোগ করে দেবে। খাদ্যদ্রব্য এখন আনা যাবে, কেনা যাবে। আমি মনে করি এটা আমাদের স্বস্তিকর বিষয়। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্বিপাকে আওয়ামী লীগ সবসময় সবার আগে এগিয়ে আসে। সবসময় মানবতার সেবায় এগিয়ে আসে। আমরা ক্ষমতায় থাকলে জনগণের সেবা করি। আর বিএনপি ক্ষমতায় থাকা মানে হলো দুর্নীতি, সন্ত্রাস, অর্থপাচার, মানব পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে:
ওদিকে গতকাল সকালে জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উদ্যাপন এবং বঙ্গ্ন্ধু জনপ্রশাসন পদক-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমেরিকা রাশিয়ার ওপর ডলার আদান-প্রদানে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এতে শুধু বাংলাদেশ নয়, ইউরোপ ও আমেরিকার অনেক উন্নত দেশও ভুক্তভোগী। এই একটা সিদ্ধান্তের কারণে আমাদের সার কেনা, খাদ্য কেনা অথবা জ্বালানি তেল কেনা, সব ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার প্রভাব সবাই ভোগ করছে। এতে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের দেশে যেমন মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, ঠিক একইভাবে উন্নত দেশগুলোতে অনেক অনেক মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। সঙ্গে জ্বালানি তেলের দামও। তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, ইউরোপ-আমেরিকার মতো উন্নত দেশগুলোও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। আমি উন্নত দেশগুলোর কথা বেশি বলবো।
কারণ আমরা তো অনেক দূরে রয়ে গেছি কিন্তু তাদের অবস্থাই হচ্ছে করুণ। সেখানে আমরা কোথায়। তারপরও বলবো প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সবাই স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করছে বলেই আমরা এখনো ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। তবুও ভবিষ্যৎ চিন্তা করে আমাদের সাশ্রয়ী ও মিতব্যয়ী হতে হবে। অহেতুক অপচয় যাতে না হয়, সেইদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি এ ক্ষেত্রে পত্রপত্রিকা নানা কথা লিখবে। টকশোতে অনেক কথা বলবে। বিরোধী দলও কথা বলবে। এটা বলাই তাদের কর্তব্য। তারা বলে যাক। আমাদের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে এবং দেখতে হবে আমরা সঠিক পথে আছি কিনা, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছি কিনা, সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি কিনা, দেশের সাধারণ মানুষ সঠিক সেবা পাচ্ছে কিনা? আমরা যদি সেভাবে চিন্তা করি, তাহলে কে কী বলছে, সেদিকে খুব বেশি নজর দিতে হবে না।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমান, মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।