বন্যায় মৌলভীবাজারের ১৬ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:২৫:৫৮,অপরাহ্ন ১৬ জুলাই ২০২২
মৌলভীবাজার জেলায় ভয়াবহ কুলাউড়া, বড়লেখা ও জুড়ি উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ তিনটি উপজেলার প্রায় তিনলাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। সরকারি হিসেবে জেলায় এবারের বন্যায় ৩৫টি ইউনিয়নে ১৬ হাজার ৩৩৯টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে মৌলভীবাজার প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
চলতি বন্যায় জেলার প্রাথমিকভাবে ৪ হাজার ৬৮০ হেক্টর ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসার মো. ছাদু মিয়া জানান। তিনি বলেন, জেলায় পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা ৬৬ হাজার ৭৪৫টি পরিবার। আর ক্ষতিগ্রস্ত লোক সংখ্যা ৩ লাখ ১৩ হাজার ৫৫২ জন।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত ৮০৫ মেট্রিকটন চাল, ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং নগদ ৭০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা সরকারের পক্ষ থেকে বিতরণ করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে বড়লেখা উপজেলার জন্য ১২ হাজার ৪১২, কুলাউড়া উপজেলা ১০ হাজার ও জুড়ীতে ৮ হাজার শিশুখাদ্য হিসেবে দুধ প্রদান করা হয়েছে। জেলায় ৭০৫ মেট্রিকটন চাল, ১৩ হাজার ৭৮টি শুকনা খাবারের প্যাকেট এবং নগদ ৪৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা এবং ৩০ হাজার ৪১২ প্যাকেট গুঁড়ো দুধ মজুত রয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলায় ১১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকের সংখ্যা ১৭ হাজার ৩৪২ জন। বন্যায় আশ্রয়কেন্দ্রে গরু, মহিষ, ভেড়া মিলে গবাদিপশু রয়েছে ২ হাজার ৬৩৫টি একথা জানান জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসার মোহাম্মদ ছাদু মিয়া।
তিনি বলেন, জেলায় মোট ৪৭টি মেডিক্যাল টিম চালু রয়েছে। আর পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রয়েছে ৫০ হাজার পিস এবং বিতরণ হয়েছে ৯৫ হাজার পিস।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়নের বোর্ডের নির্বাহী অফিসার আক্তারুজ্জামান বলেন, মৌলভীবাজার জেলায় বন্যার পানি নেমে গেলে মনু, ধলাই, ফানাইসহ বিভিন্ন নদীর ড্রেজিং ও প্রতিরক্ষা বাঁধের ক্ষতি নিরুপন করে প্রকল্প নেয়া হবে। এছাড়া জুড়ি নদীতে রাবার ডেম ও হাকালুকি হাওরের পানি ফেঞ্চুগঞ্জের কুশিয়ারা নদী দিয়ে দ্রæত নিষ্কাষনের কি পদক্ষেপ নেয়া যায় তা তদন্ত করে প্রকল্প নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরোও জানান পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব মহোদয় সম্প্রতি মৌলভীবাজার সফর করে হাকালুকি হাওর এলাকা বন্যার পানির ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও জেলার মনুনদীসহ বিভিন্ন ছোটবড় নদীর ড্রেজিং এর প্রকল্প মন্ত্রনালয়ে পাঠানোর নির্দেশনা দিয়ে গেছেন।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পূর্ণবাসন, অবকাঠামোর মেরামতের জন্য বন্যা পরর্বতী সময়ে জেলা প্রশাসন সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রনালয়ে ইতিমধ্যে সার্বিক তথ্য পাঠানো হয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য সরকারের ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।