প্রলয়ংকারী বন্যায় সিলেটে বন্যায় ৫৭ জনের মৃত্যু
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:১৩:৫৬,অপরাহ্ন ০৬ জুলাই ২০২২
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
দ্বিতীয় দফার বন্যার ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো সিলেটে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি কয়েকটি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সিলেটের সাতটি উপজেলার অনেক জায়গা থেকে এখনো নামেনি বন্যার পানি। তাই আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে পারেননি এসব এলাকার বন্যাদুর্গত মানুষ।
এদিকে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সারাদেশে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১০ জন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে সিলেট বিভাগে। ১৭ মে থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত মৃত্যুর এই সংখ্যা দাঁড়ালো।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার পর্যন্ত বন্যাজনিত বিভিন্ন রোগে ১৩ হাজার ১৯৮ জন আক্রান্ত থাকলেও বুধবার তা বেড়ে ১৩ হাজার ৮৯২ জনে দাঁড়িয়েছে।
বন্যার শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন আট হাজার ৭৯৪ জন। এতে মৃত্যু হয়েছে একজনের। আরটিআই (চোখের রোগ) রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮৫ জন। এক্ষেত্রে কারও মৃত্যুর খবর নেই।
এছাড়া বজ্রপাতে আহত ১৫ জনের সবার মৃত্যু হয়েছে। সাপের দংশনের শিকার হয়েছেন ১৫ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুজনের। আর পানিতে ডুবে ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বন্যায় রংপুর বিভাগে ১২, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪০, সিলেট বিভাগে ৫৭ ও ঢাকা বিভাগে একজনসহ মোট ১১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা ভিত্তিক মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে সুনামগঞ্জ। ১৭ মে থেকে ৪ জুলাইয়ের মধ্যে এখানে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অপরদিকে সিলেটে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ও বুধবার সকালে ভারী বৃষ্টি হওয়ার ফলে সুরমা নদীর দুটি পয়েন্টে এবং লুভা ও সারী নদীর পানি বেড়েছে। পাশাপাশি কিছুটা পানি বেড়েছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে। তবে কুশিয়ারা নদীর কয়েকটি পয়েন্টে এবং ধলাই নদের পানি কিছুটা কমেছে। এ বৃষ্টি ঈদুল আযহার দিন (রোববার) পর্যন্ত এভাবে অব্যাহত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বুধবার সকালে সিলেট নগরী ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির প্রভাবে নতুন করে কোনো এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হলেও মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এবং বুধবার সকালে বৃষ্টির কারণে বন্যাবকলিত বিভিন্ন এলাকায় পানি কিছুটা বেড়ে গেছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার তুলনায় বুধবার সকাল নয়টায় পানি দশমিক শূন্য ৯ সেন্টিমিটার বেড়ে ১৩ দশমিক শূন্য ৯ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হয়েছে। তবে একই পয়েন্টে বিকাল ৩টায় ১৩ দশমিক শূন্য ৬ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হয়।
অপরদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার তুলনায় বুধবার সকাল নয়টায় সুরমার সিলেট পয়েন্টে পানি দশমিক শূন্য ২ সেন্টিমিটার বেড়ে ১০ দশমিক ৪২ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হয়েছে। একই পয়েন্টে বিকাল ৩টায় ১০ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হয়।
এদিকে, কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে পানি মঙ্গলবারের তুলনায় পানি সামান্য কমেছে। নদীটির শেওলনা পয়েন্টেও পানি কমেছে। কমেছে শেরপুর পয়েন্টেও। তবে ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।
সিলেট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, বৃষ্টির প্রভাবে পানি কিছুটা বেড়েছে। তবে সেটি বিপৎসম নয়। বৃষ্টি কমে এলে পানি কমে যাবে।