বন্যায় ঘরের সব ভেসে গেছে সিলেটের আখতারুজ্জামান-মুর্শিদা দম্পতির
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ জুলাই ২০২২, ৯:৩৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদের শাখা জাহাজখালী নদী। এর পাড় ঘেঁষেই দাঁড়িয়ে আছে পশ্চিম বুড়দেও গ্রাম। এ গ্রামেই বাস আখতারুজ্জামান-মুর্শিদা খাতুন দম্পতির।
১৫ জুন এক রাতের ব্যবধানে বন্যায় তাঁদের ঘরে গলাসমান পানি হয়ে যায়। তখন এক কাপড়ে পরিবারের সদস্যরা বের হয়ে যান। আখতারুজ্জামান-মুর্শিদারা এক সপ্তাহ পর ঘরে ফিরে দেখেন, তাঁদের পুরো ঘর বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। ভেঙে গেছে এক পাশের বেড়া। ভেসে গেছে ফ্রিজ, আসবাব, হাঁড়িপাতিল, চাল-ডাল। এসব হারিয়ে এখন বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।
মুর্শিদা খাতুন (৩৫) জানান, শাশুড়ি, স্বামী এবং দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার। বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বাকি তিন সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে স্নাতকে, ছোট ছেলে তৃতীয় শ্রেণিতে এবং সবার ছোট মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। বন্যায় সন্তানদের বইপুস্তকও ভেসে গেছে, ভিজে নষ্ট হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, আখতারুজ্জামানের (৫৫) ঘরের পেছনের দিকে অন্তত দুই থেকে তিন হাত অংশ বন্যার পানির স্রোতে ভেঙে গেছে। ভেঙে যাওয়া টিন নদীর পাড়ে স্তূপ করে রাখা। নদীর পানির ঢেউ টিনে এসে আঘাত হানছে। টিন যেন পানিতে ভেসে না যায় এবং পানির স্রোত যেন ঘরের বিধ্বস্ত অংশে আঘাত করলেও মাটির ধস ঠেকাতে পারে, সে জন্য একাধিক বালুর বস্তা ফেলে রাখা হয়েছে। বন্যার পানিতে ভেজা তোশক থেকে তুলো বের করে পানিতে ধুয়ে তা রোদে শুকোতে দিচ্ছিলেন মুর্শিদা খাতুন। এ সময় তাঁর সঙ্গে কথা হয়। ভাঙা ঘরের কথা বলতে বলতে তিনি কেঁদে ফেলেন।
মুর্শিদা বলেন, ‘ঘরে খাবারদাবারই নেই, আর ঘর ঠিক (মেরামত) করা তো দূরের কথা। এই ভাঙা ঘর ঠিক করার সামর্থ্য আমাদের নেই। স্বামী গার্মেন্টসশ্রমিক। সঞ্চয় বলতেও আমাদের কিছু নেই। উপজেলা সদরের পাশে আমাদের গ্রামের অবস্থান হওয়ায় সচ্ছল ভেবে কেউ ত্রাণও দেয়নি। অথচ এখন না খেয়ে থাকার মতো অবস্থা আমাদের।’
মুর্শিদা জানান, বন্যায় তাঁর স্বামীর কাজ বন্ধ। ধারকর্জ করে কোনোরকমে চলছেন তাঁরা। ঘরের সবকিছু বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়ায় আবার নতুন করে সংসার সাজাতে হবে। ঘরের পেছনের অংশে এখনো পানি জমে আছে। বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে গেলে যে আবার ঘরটি সংস্কার করবেন সে আর্থিক অবস্থাও তাঁদের নেই। এ নিয়ে তাই তাঁরা দুশ্চিন্তা আর শঙ্কায় আছেন।
কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুসিকান্ত হাজং বলেন, আখতারুজ্জামান-মুর্শিদার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে এবং অবশ্যই তাঁদের সহযোগিতা করা হবে।সুত্র-প্রথম আলো