সিলেটের বানভাসিরা অসহায় : নির্ঘুম রাতে বাড়ে অজানা ‘আতঙ্ক’
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৩৭:৫৫,অপরাহ্ন ১৮ জুন ২০২২
ওয়েছ খছরুঃ
বন্যা গ্রাস করেছে চারদিক। অনেক এলাকা বিদ্যুৎহীন। ভুতুরে পরিবেশ। বাড়িঘরে পানি। বেশির ভাগ মানুষ উঠেছেন আশ্রয় কেন্দ্রে। ঘর পাহারায় কেউ কেউ মাচাং বেধে বসবাস করছেন বাড়িতে। পানি নামার আশায় কেউ বাড়িতে আছেন। কারো চোখে ঘুম নেই। অভুক্ত লোকজন। খাদ্য সঙ্কট চরমে।
কিন্তু বিরাজ করছে অজানা আতঙ্ক। রাত নামলেই বাড়ে শঙ্কা। ঢল নামে রাতের বেলা বেশি।
বৃহস্পতিবার রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে ছিলেন সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জের মানুষ। কিন্তু রাত গভীর হতেই পানির শব্দে ভাঙে ঘুম। জাফলং এলাকার শাহজাহান মিয়া জানিয়েছেন- পার্শ্ববর্তী মেঘালয়ের পাহাড় থেকে হঠাৎ করে নামে ঢল। বৃহস্পতিবার রাতে তীব্র বেগে ঢল নামা শুরু হয়েছিলো। এক ঘন্টায় পানি বেড়ে যায় দুই ফুট। ভোর হওয়ার আগেই বসতঘর তলিয়ে যায়। কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাটের শতভাগ এলাকা এখন নিচে। ঢল নামছেই। সন্ধ্যার পর প্রবল বেগে ঢল আসে কোনো কোনো এলাকা দিয়ে। এ কারণে বাড়িতেই বসবাস দায় হয়ে পড়েছে।
কোম্পানীগঞ্জের সীমান্তবর্তী দয়ারবাজার সহ কয়েকটি এলাকায় পানি বেড়েছে। কোম্পানীগঞ্জের নুরুল ইসলাম জানান- রাতে আমরা আতঙ্ক থাকি। দিনের চেয়ে পাহাড়ে রাতে বৃষ্টি হয় বেশি। এ কারণে ঢলও রাতে নামে। এবারের ঢলের ধরন ভিন্ন। শব্দ করে তীব্র বেগে আসে। ভাসিয়ে নিয়ে যায় বাড়িঘর। এ কারণে ঢলকে ঘিরেই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বেশি। একই সঙ্গে সিলেটের ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এ বর্ষনের কারনে পানি বাড়ছে।
গোয়াইনঘাটের হেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন- উজানের ঢলে তছনছ হয়ে যায় গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ। এবারো তাই হলো। রাতে বিদ্যুৎ নেই। মানুষজনও আটকা। রাতে কোনো বিপদ হলে উদ্ধারের কেউ নেই। ফলে আতঙ্কে রয়েছেন বন্যায় আক্রান্ত লোকজন। তিনি জানান- তীব্র ঢলের মুখেও বৃহস্পতিবার রাতে ইউএনও এবং ওসি উদ্ধার কাজ চালিয়েছেন। আর ঢল নামার সময় উদ্ধার কাজ চালানো যায় না।
এবারের বন্যায় সিলেটে ইতিমধ্যে প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের উদ্ধারে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে কাজ শুরু করেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করেছেন।