৬ মাস গরুর সঙ্গে রাখলেও ছেলেদের জেল থেকে ছাড়িয়ে আনলেন মা-ই
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:১০:২৪,অপরাহ্ন ১৪ জুন ২০২২
অনেক কষ্টে ছেলেদের বড় করে তুলেছেন মা। কিন্তু স্ত্রী পেয়ে ছেলেরাই মাকে গরুর সঙ্গে রেখেছিলেন গোয়ালঘরে। ঠিকমতো দিতেন না খাবারও। এভাবেই কেটে যায় প্রায় ছয় মাস। অবশেষে বিষয়টি নজরে এলে সেই মাকে উদ্ধার করে পুলিশ। আটক করা হয় ছেলেদেরও। অথচ ছেলে আর পুত্রবধূদের ছাড়িয়ে আনলেন মা-ই।
ঘটনাটি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চারিগ্রাম ইউনিয়নের। সোমবার বিকেলে ৮৫ বছর বয়সী মা আয়োশা বেগমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুই ছেলে ও তাদের স্ত্রীদের জামিন মঞ্জুর করে আদালত।
চারিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাজেদুল আলম স্বাধীন বলেন, বৃদ্ধা আয়েশা বেগমকে দেখার মতো আর কেউ নেই। তাই এলাকার মুরুব্বিদের সঙ্গে আলোচনা করে ছেলে কালাম মিয়া, মোস্তফা কামাল ও পুত্রবধূ মর্জিনা আক্তারের জামিন করানো হয়েছে। জামিন শুনানির সময় আদালতে মা আয়েশা বেগম উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতে মায়ের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করবেন না বলেও অঙ্গিকার করেছেন ছেলে ও ছেলেদের স্ত্রীরা। ঠিকমতো সেবাযত্ন ও দেখভাল করবেন।
১২ জুন রাতে দুই ছেলে ও পুত্রবধূদের নামে সিংগাইর থানায় মামলা করেন আয়েশা বেগম। রাতেই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। সোমবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্ল্যা জানান, চারিগ্রাম গ্রামের ওই মাকে তার ছেলে ও পুত্রবধূরা প্রায় ছয় মাস ধরে গোয়ালঘরে গরুর সঙ্গে রেখেছিলেন। ঠিকমতো খাবার দিতেন না। খারাপ আচরণ করতেন। প্রতিবেশীরা তাকে খাবার দিলে এবং সেবাযত্ন করতে গেলে তাদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করতেন ছেলে ও তাদের স্ত্রীরা।
পরে ঘটনাটি পুলিশ সুপারকে জানায় স্থানীয়রা। এরপর রোববার বিকেলে ওই বৃদ্ধাকে গোয়ালঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। একই সঙ্গে দুই ছেলে ও স্ত্রীদের আটক করা হয়।
এ ঘটনায় রোববার সকালে পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইনে ছেলে মো. কালাম মিয়া, মোস্তফা কামাল এবং পুত্রবধূ মর্জিনা আক্তার ও বিলকিস আক্তারকে আসামি করে থানায় মামলা করেন ওই বৃদ্ধা। পরে আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়।
ওসি সফিকুল ইসলাম আরো জানান, এলাকাবাসীর অনুরোধে পরে মা-ই আদালতে ছেলে ও পুত্রবধূদের জন্য জামিন আবেদন করেন। পরে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করে।