সিলেটে হাওরে ভেসে উঠল লাশ, পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৫৩:৩৯,অপরাহ্ন ৩০ মে ২০২২
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
গ্রেপ্তার এড়াতে হাওরে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে পালিয়ে যাওয়ার সময় পলাতক আসামি দুলাল আহমদকে আঘাত করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। সিলেটের বিয়ানীবাজারের পিরেরচক এলাকার হাওরে শনিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। রোববার সকালে ওই হাওরের কদম আনি বিলে যুবকের লাশ ভেসে ওঠে।
নিহত দুলাল উপজেলার তিলপাড়া ইউনিয়নের পিরেরচক এলাকার মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। সে প্রথম স্ত্রীর করা একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ছিল।
দুলালের লাশ ভেসে ওঠার খবর পেয়ে এলাকার শতশত মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। তারা পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। জানতে পেরে বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীকে নিয়ন্ত্রণ করেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দুলাল আহমদ শনিবার বিকেলে স্থানীয় কুশিটিকি সেতুর উত্তর হাওরে নৌকাবাইচ দেখতে গিয়েছিলেন। নৌকাবাইচ শুরু হওয়ার আগে সাদা পোশাকের একদল পুলিশ দুলালের পাশে দাঁড়ানো যুবককে নাম জিজ্ঞেস করতেই দুলাল আহমদ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
একপর্যায়ে তিনি হাওরের পানিতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার কাটতে থাকলে পুলিশ সদস্যরা নৌকায় পিছু নেয়। তাদের অভিযোগ, পুলিশ যে নৌকায় দুলালের পিছু নিয়েছিল, সে নৌকার লগি ও হাতে থাকা বাঁশ দিয়ে তাকে আঘাত করে। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। রোববার সকালে গ্রামের লোকজন কদম আনি বিলে মাছ শিকারে গেলে দুলাল আহমদের লাশ দেখতে পেয়ে তার বাড়িতে খবর দেন।
নিহত দুলাল আহমদের ছোট ভাই সেলিম উদ্দিন বলেন, ভাই (দুলাল আহমদ) ভালো সাঁতার জানতেন। তার পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাকে মারা হয়েছে। তার বাম কানের কাছে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
পুলিশকে দুলাল আহমদের পিছু নিতে দেখা স্থানীয় এক বৃদ্ধা বলেন, আমি পুলিশের দুই সদস্যকে বলেছি আসামি ভয়ে পালিয়ে গেছে আপনারা ওই দিকে আর যাবেন না। ওখানে পানি ও কাদা আছে। তারা আমার বাড়ির পাশ থেকে বড় বড় বাঁশ হাতে নিয়ে জুতা খুলে পিছু নেয়। তাদের একজনের নাম জসিম বলে আমি শুনেছি।
বিয়ানীবাজার থানার এসআই জসিম উদ্দিনের মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তিলপাড়া ইউনিয়ন বিট পুলিশ কর্মকর্তা হলেও লাশ উদ্ধারে তিনি যাননি।
বিয়ানীবাজার থানা ওসি হিল্লোল রায় বলেন, পুলিশ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে অভিযানে গেলে আসামি পালিয়ে যেতে পানিতে ঝাঁপ দেয়। এলাকাবাসীর কাছে থেকে খবর পেয়ে হাওর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব বলেন, দুলাল আহমদকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ করে এলাকাবাসী উত্তেজিত ছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তাদের আশ্বস্ত করেছি। ময়নাতদন্ত শেষে জানা যাবে তিনি কীভাবে মারা গেছেন।