বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে সিলেটে ছিঁচকে চোরের যন্ত্রণা
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ মে ২০২২, ১০:২০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে ছিঁচকে চোরের উপদ্রব বেড়েছে। সুরমা নদীর পানি উপচে নগরে প্রবেশ করায় বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা ঘর ছেড়ে স্বজনদের বাসাবাড়িতে উঠেছেন।
এ ছাড়া জলাবদ্ধ নগরীর বেশ কিছু এলাকার বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ আছে। এ অবস্থার সুযোগ নিয়ে অনেকের বাসাবাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটছে। চুরি ঠেকাতে পানিবন্দী অবস্থায় বাসিন্দারা বাড়িঘর পাহারা দিচ্ছেন।
বন্যা পরিস্থিতির কারণে নগরের শাহজালাল উপশহর, যতরপুর, শেখঘাট, কলাপাড়া, সোনাপাড়া, মেন্দিবাগ, মাছিমপুর, ছড়ার পার, চালিবন্দর কানিশাইল, মণিপুরি রাজবাড়ি, তালতলা, জামতলা এলাকার বাসিন্দারা জলাবদ্ধ অবস্থায় আছেন। এর মধ্যে বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ আছে শাহজালাল উপশহর, কলাপাড়া, মেন্দিবাগ, মাছিমপুরসহ কিছু এলাকার।
সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শহর ও শহরতলি এলাকার প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার গ্রাহক পানিবন্দী ও কিছু উপকেন্দ্র পানির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
শাহজালাল উপশহর জে ব্লকের বাসিন্দা সাঈদুর রহমান বলেন, গত মঙ্গলবার থেকে বিদ্যুৎ নেই। অসুস্থ মাকে নিয়ে শাহি ঈদগাহ এলাকার স্বজনদের বাসায় উঠেছেন তিনি। গত বুধবার রাতে বাসায় জরুরি কাপড়চোপড় নিতে অবস্থান করছিলেন বড় বোন। তখন জানালার পাশে দুটি মুঠোফোন রেখে অন্য একটি কক্ষে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে তিনি মুঠোফোনগুলো আর পাননি। তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে দিনে অন্য জায়গায় থাকলেও রাতে অন্ধকারের মধ্যে বাসা পাহারা দিতে হচ্ছে।
ডি ব্লকের বাসিন্দা হোসেন আহমদ বলেন, ‘রাত হলে অন্ধকার নামে। পাশের বাড়িতে বুধবার রাতে চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। ওই বাসায় মানুষেরা জলাবদ্ধতার কারণে অন্যত্র ছিলেন। এ সুযোগে রাতে বাসায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। পরের দিন বাড়ির মানুষ সেটি জানতে পেরেছেন। এ জন্য পানিবন্দী হলেও বাসা ছাড়তে পারছি না।’
নগরের জামতলা এলাকার বাসিন্দা রিয়াজ মিয়া বলেন, ঘরের ভেতরেই হাঁটুপানি। চার দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। পরিবারের অন্য সদস্যদের স্বজনদের বাড়িতে পাঠালেও নিজে বাসায় থাকছেন। বুধবার রাতে জানালার লক ভেঙে চুরির চেষ্টা করেছিল চোরেরা। তখন ঘুম ভেঙে যাওয়ায় চিৎকার দিলে দুই ব্যক্তিকে পালিয়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পান।
সিলেটের শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, শাহজালাল উপশহর এলাকা পানিবন্দী অবস্থায় আছে। এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন এলাকাটি। এমন অবস্থায় দু-একটি চুরির খবর তাঁরা পেয়েছেন। তবে কেউই থানায় এসে অভিযোগ দেননি। এরপরও উপশহর পুলিশ ফাঁড়িকে তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, ‘রাতে অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে যাতে কেউ চুরির ঘটনা না ঘটায়, সে ব্যাপারে আমরা সজাগ আছি। যেসব এলাকা জলাবদ্ধ অবস্থায় আছে, সেসব এলাকার প্রবেশ ও বাইরে যাওয়ার পথে পুলিশ নজরদারি করছে।’সুত্র-প্রথম আলো