বিদ্যুতের চোর-পুলিশ খেলা: ইফতার তারাবি সেহরিতেও মুক্তি নেই ওসমানীনগরবাসীর, আন্দোলনের হুমকি
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৩৯:৪৯,অপরাহ্ন ২৫ এপ্রিল ২০২২
জুবেল আহমেদ:
রমজান মাসেও বিদ্যুৎবিভ্রাটের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না ওসমানীনগরবাসী। বিশেষ করে ইফতার, তারাবি ও সেহরির সময় বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় মারাত্মক ভোগান্তিতে ফেলেছে এলাকাবাসীকে। গত দু’দিন ধরে বিদ্যুতের যাওয়া-আসার মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে, এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। দিচ্ছেন আন্দোলনের হুমকি।
প্রতিবছরের মতো এবারও রমজান শুরু হওয়ার সাথে সাথেই ওসমানীনগরে শুরু হয়েছে বিদ্যুতের যাওয়া আসার খেলা। রমজানের ইফতার, তারাবিহ ও সেহরীর সময়ে লোডশেডিং ছাড়িয়েছে সহনীয়তার মাত্রা। বিদ্যুতের এ তীব্র লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ ওসমানীনগর উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ। যেন বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের কাছে সবাই জিম্মি।
গরম কিছুতেই কমছে না। দিনে যেমন রোদের খড়তাপ তেমনি রাতে বইছে গরম হাওয়া। সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে অসহনীয় লোডশেডিং। সারাদিন রোজা পালন শেষে যখন ইফতার সামনে নিয়ে বসা ঠিক তখনই যেন লোডশেডিং এর সময়। সারাদিনতো এমনিতেই চলে বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার খেলা। তার উপর ইফতার-তারাবীহ-সেহরি এই সময়টুকুতে লোডশেডিং যেন নিয়ম মাফিক হয়ে গেছে। জনমনে এখন একটাই প্রশ্ন, রমজান আসলেই কি হয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের?
রমজানের প্রথম তারবীহ থেকে চলছে বিদ্যুতের এমন আসা যাওয়ার খেলা। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বিদ্যুতের এমন ভেলকিবাজি। আর রাতে একটু বাতাস বইলেতো সেটুকুও উধাও। রমজানে এমন লোডশেডিং-এ রোজাদার থেকে শুরু করে বৃদ্ধ শিশু ও অসুস্থ মানুষ বিদ্যুৎ না থাকায় তীব্র তাপদাহে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও এর রেশ যথেষ্ট উদ্বেগজনক। পবিত্র রমজান মাসে যেখানে এ উপজেলার গ্রাহকেরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানিয়ে আসছিলেন, বিশেষ করে ইফতার-তারাবিহ-সেহরীর সময়ে, সেখানে গুরুত্বপূর্ণ এই তিন সময়সহ দিনরাত অব্যাহত লোডশেডিংয়ের অসহনীয় যন্ত্রণা বিক্ষুব্ধ করে তুলছে তাদেরকে।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী রাসেল আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মিডিয়াতে আমরা দেখতে পাই দেশে বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি নেই। তাহলে সরকারের এত বিদ্যুৎ যায় কোথায়? এভাবে লাগাতার লোডশেডিংয়ে আমাদেরকে কেন ভোগান্তিতে ফেলছেন বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা। এর রহস্য কি?
গ্রাহক ইমরান আহমেদ বলেন, রমজান আসলেই বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ লোডশেডিংএর মাত্রা বাড়িয়ে দেন। দেশে এতো বিদ্যুৎ থাকতে আমরা অবহেলিত কেন? ইফতার-তারাবীহ-সেহরিতে লোডশেডিং করে আমাদের ধর্মপ্রান মুসলমানদের কেন কষ্টের মুখে ঠেলে দিচ্ছে বিদ্যুত কর্মকর্তারা। অতি শীঘ্রই এর প্রতিকার না হলে আমরা বড় ধরণের আন্দোলনে যাবো।
এতে করে প্রতিদিনের কাজে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে উপজেলাবাসীকে। গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন একটু মেঘলা আকাশ হলেই বিদ্যুৎতের ভেলকিবাজি শুরু হয়ে যায়। বিদ্যুতের চোর-পুলিশ খেলা এখন যেন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছে। আর এ থেকে ব্যাহত হচ্ছে সরকারি কার্যক্রম, ব্যবসা বাণিজ্য, লেখাপড়া ও চিকিৎসাসেবা।
বিদ্যুতের এই ভেলকিবাজি থেকে রেহাই দিতে বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আহবান জানিয়েছেন গ্রাহকরা, অন্যথায় আন্দোলনের হুমকিও দেন তারা।
এ ব্যাপারে কাশিকাপন জোনাল অফিসে্র ডিজিএমের মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।