হাসপাতালে ইনজেকশন পুশ করছে টিকিট বিক্রেতা!
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ এপ্রিল ২০২২, ২:২২ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
অনিয়মই নিয়ম হয়ে গেছে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়ায়)। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীদের ইনজেকশন ও স্যালাইন পুশ করছে টিকেট বিক্রেতা। গত কয়েকদিনে জেলাজুড়ে ডায়রিয়া রোগীর হার উদ্বেগজনক মাত্রায় বেড়েছে। রোগীরা চিকিৎসার জন্য শরণাপন্ন হচ্ছেন জেনারেল হাসপাতালে। প্রতিদিন প্রায় ৩০০ রোগী হাসপাতালে আসছেন। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে নিয়মিত ৭-৮ জন নার্স ডিউটিতে থাকলেও চিকিৎসা দেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টিকেট বিক্রেতা আব্দুর রশিদ। রোগীদের ইনজেকশন কিংবা স্যালাইন দেয়ার কাজে নিযুক্ত রয়েছেন তিনি?
ডায়রিয়া ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের ১০ বেডের পাশাপাশি আরও ১০টি বেড যুক্ত করা হয়েছে। এসব বেডে আব্দুর রশিদ ঘুরে ঘুরে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছেন।
অন্যদিকে অলস সময় পার করছেন ডিউটিরত একাধিক নার্স। তবে মাঝে-মধ্যে উঠে রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে পুনরায় বসে পড়েন তাদের চেয়ারে।
বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেন চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর স্বজন সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, আর্থিকভাবে সচ্ছল না যে প্রাইভেটে চিকিৎসা করাবো। এখানে কোনো সমস্যা হলে আসি চিকিৎসার জন্য। ভাইয়ের ডায়রিয়া হয়ে খারাপ অবস্থা। ওরে নিয়ে আসছি চিকিৎসা করাইতে। আসার পর যেই ভাই ওনারে স্যালাইন দিলো, ইনজেকশন পুশ করলো তাকে আমি আগে টিকেট বিক্রি করতে দেখতাম। নার্স বইসা থাকতে সে কেন চিকিৎসা করতাছে বুঝলাম না। এটা তো সাধারণ মানুষও বুঝে ইনজেকশন ঠিকমতো পুশ না করতে পারলে কত বড় ক্ষতি হতে পারে। তারপরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কীভাবে এতো দায়িত্বহীন হয়।
চিকিৎসার ন্যূনতম জ্ঞান থাকলেও টিকেট বিক্রেতা আব্দুর রশিদ কীভাবে রোগীদের চিকিৎসা করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসপাতালে থেকে দেখে দেখে এসব কাজ শিখেছি। হাসপাতালের সুইপারও চিকিৎসার এসব কাজ জানে। এখন এখানে চিকিৎসা দিচ্ছি রোগী না থাকলে পরে আবার টিকেট বিক্রি করবো।
হাসপাতালে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি উঠেছে রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ। নীট কনসার্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আব্দুর রউফ বলেন, আমার সহকর্মী ইব্রাহিমের পেট খারাপ। হাসপাতালে নিয়ে আসছি। হাসপাতালের নার্সের সঙ্গে একটা সমস্যা নিয়ে কথা বলতে গেলাম। কথা শুরুর আগেই রাগ হয়ে আমাকে বলেন, এখন কথা বলতে পারবো না, সামনে যান। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এলেই খারাপ ব্যবহারের সম্মুখীন হওয়া লাগে। পাশে থাকা অপর এক রোগী সেই নার্সের দিকে আঙ্গুুল দেখিয়ে বলেন, মাধুরী ম্যাডামের রাগ বেশি। তিনি আমাদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করছেন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এসকে ফরহাদ এ বিষয়ে বলেন, নার্সরা রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে এমন একটি তথ্য আমি আগেও পেয়েছি। এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে কথা বলবো।
তিনি টিকেট বিক্রেতার চিকিৎসা প্রদানের বিষয়ে বলেন, হাসপাতালে নার্সের বদলে টিকেট বিক্রেতা চিকিৎসার কাজ করছে এ বিষয়ে আমার জানা ছিল না, আমি এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।