‘টাকা দিবি না! ইয়াবা দিয়া ধরাইয়া দিমু’
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৪৬:১৮,অপরাহ্ন ১৩ এপ্রিল ২০২২
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতার টাকা দিতে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারপারসন শাহিন আক্তার মায়ার বিরুদ্ধে। আজ বুধবার বিকেলে ভুক্তভোগী ১২ জন প্রশিক্ষণার্থী উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা অভিষেক দাশের কাছে এনিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ইউএনও অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করলেও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করেননি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জাতীয় মহিলা সংস্থার আওতাধীন ২০২১-২২ অর্থ বছরে ‘তৃণমূল পর্যায়ের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্প’র অধীনে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, ই-কমার্স, ফ্যাশন ডিজাইন, বিউটিফিকেশন, ক্যাটারিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টে প্রশিক্ষন দেওয়া হয় দুইশ ৮৯ জনকে।
যা গত ১৪ মার্চ সম্পূর্ণ হয়। তাদের মধ্যে ৪০ দিনের প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা ধার্য ছিল ৬ হাজার এবং ৮০ দিনের প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ১২ হাজার টাকা। কিন্তু প্রশিক্ষণ শেষে টাকার চেক আনতে গেলেই মহিলা সংস্থার চেয়ারপারসন শাহীন আক্তার মায়াকে দিতে হয় দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা। তাছাড়াও প্রশিক্ষণ চলাকালীন বিভিন্ন অযুহাতে একশ থেকে তিন’শ টাকা নিতেন অফিস খরচ দেখিয়ে।
অভিযোগে আরো উল্লেখ রয়েছে যে, তার চাহিদা মতো টাকা না দেওয়া প্রায় ১শ ৮০ জনের ভাতার চেক এখনো হস্তান্তর করছেন না। এই বিষয়ে কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থী তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে তাদেরকে অফিস থেকে তাড়িয়ে দেন শাহিন আক্তার মায়া।
প্রশিক্ষণার্থী রোকসানা খাতুন, তানজিনা আক্তার, খাদিজা আক্তার ও মঞ্জু বেগম বলেন, ‘‘আমরা একসাথে ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি ৮৯ জন ও ৮০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি ২শ জন। যারা ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি তাদের কাছ থেকে মায়া মেডাম অগ্রিম ২ হাজার করে টাকা নিয়ে পরে ৬ হাজার টাকার চেক দিয়েছেন। আর যারা ৮০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তাদেরকে বলা হয়েছে প্রত্যেকে ৪ হাজার টাকা করে মেডামের কাছে অগ্রিম জমা দিতে। তবেই তিনি সকলকে ১২ হাজার টাকা করে চেক প্রদান করবেন। আমরা অনেকেই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান মেডাম নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে বলছেন, ‘যারা টাকা দিবি না! তাগরে ইয়াবা দিয়া ধরাইয়া দিমু, তখন বুজবি মজা’। ’’
অভিযুক্ত শাহীন আক্তার মায়া মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেইনি। কেউ নিয়ে থাকলে আমার তা জানা নেই। ২০১০ সাল থেকে আমি এই চেয়ারে আছি। এখন পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ আনার সাহস করও হয়নি। ’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, ‘প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ’
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারপারসন বেগম চেমন আরা তৈয়ব মুঠোফোনে বলেন, প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।