মেডিকেলে চান্স পেয়েও দুশ্চিন্তায় সুমি
প্রকাশিত হয়েছে : ২:০২:৩৬,অপরাহ্ন ০৯ এপ্রিল ২০২২
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
ফেনীর দাগনভূঞায় পান বিক্রেতার মেয়ে সুমি রায় মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন।
উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের পূর্ব হীরাপুর গ্রামের পরিমল রায় ও শিখা রানী রায়ের একমাত্র মেয়ে সুমি রায় মেডিকেল কলেজের সদ্য প্রকাশিত ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রমে ২৭৭তম হয়েছেন। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৮৩.২৫।
সুমি বলেন, সিলোনিয়া হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেলেও ফেনী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসিতে পেয়েছেন গোল্ডেন জিপিএ-৫। প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষক ও সহপাঠীরা তাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন।
সুমি রায় বলেন, তার বাবা সিলোনীয়া বাজারে টুকরির মধ্যে পান বিক্রি করে সংসার চালান। মা গৃহিণী। বাবার একার আয়ে কোনমতে চলে সংসার। এইচএসসির পর মামা-চাচাদের সাহায্য সহযোগিতায় রেটিনাতে কোচিং করে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন।
তিন ভাই-বোনের মধ্যে বর্তমানে সবার বড় সুমি বলেন, অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হয়ে তার বড় ভাই শৈশবেই মারা যায়। বেদনা ভারাক্রান্ত সুমি সেই থেকে ইচ্ছে চাপে চিকিৎসক হয়ে মানুষকে সেবা করবেন।
জীবন বাঁচাতে আপ্রান চেষ্টা চালাবেন। এছাড়া ছোট বেলায় জেনেছেন যার সন্তান চিকিৎসক তার মা রত্নগর্ভা। সন্তানের রত্নগর্ভা মা বানাতে আমি চিকিৎসক হতে চাই।
সুমির মা-বাবার চোখে মুখে আনন্দ দেখা গেলেও ভিতরে আছে গভীর দুশ্চিন্তা। মেডিকেলে ভর্তির খরচ জোগাতেই গলদঘর্ম অবস্থা হবে বাবা পরিমলের। তার ছোট ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। তার বাড়িতে রয়েছে একটি টিনের ঘর। সেই ঘরেই থাকেন পরিবারের সবাই।
সুমি বলেন, মে মাসে মেডিকেলে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। ভর্তি ও হোস্টেলে থাকার জন্য ভর্তির সময় প্রায় ২৫ হাজার টাকার মতো লাগবে। অতীতের মতো মামা ও আত্মীয়-স্বজনা তাকে সহায়তা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। কেউ তাকে সহযোগিতা করলে তিনি তা গ্রহণ করবেন। তবে তিনি কারো কাছে হাত পেতে সাহায্য নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
সুমির জেঠা নন্দলাল রায় বলেন, মেডিকেলে পড়ার খরচের কথা চিন্তা করলেই বেদনায় মুখ মলিন হয়ে আসে। এজন্য তিনি এলাকার বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।