সিন্ডিকেটের কব্জায় সিলেটের নিত্যপণ্যের বাজার
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৫৩:২১,অপরাহ্ন ০৪ এপ্রিল ২০২২
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
করোনা কারণে অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। কেউবা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে দিন পার করছেন।সংসারে অনটন। নুন আন্তে পান্তা ফুরোয়। সংসারের এ অবস্থায় যখন বাজারের দ্রব্যমূলের দাম বৃদ্ধি পায় তখন সংসার চালেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্যদের।পবিত্র রমজানকে কেন্দ্র করে সিলেটের খুচরা বাজার থেকে পাইকারি বাজারেও দাম বেড়েছে আরেক দফা।
রোববার প্রথম রমজানের দিনে সিলেটের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়,বাজারগুলোতে তেল, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ, চাউল, খেজুর ও অন্যান্য নিত্যপণ্য বিক্রি বেড়েছে। তবে সব পণ্যে রাখা হচ্ছে চড়া দাম। ভোজ্যতেল আমদানিতে সরকার ১০ শতাংশ ভ্যাট কমালেও এখনো আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।
দোকানগুলোতে বোতলজাত ভোজ্য তেল ৫ লিটার সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৭৯০ থেকে ৮০০ টাকা এবং এক লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়।
দোকানগুলোতে বোতলজাত ভোজ্য তেল ৫ লিটার সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৭৯০ থেকে ৮০০ টাকা এবং এক লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়। ছোলার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে এখন ৭৫ টাকা। বুটের ডাল ৫ টাকা বেড়ে কেজি এখন ৭৫ টাকা। কদিন আগেও ৯০ টাকা কেজি বিক্রি দেরে বিক্রি হওয়া মশুর ডাল এখন ১২০ টাকা কেজি। বেসন কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকায়। বাজারে মোটা চাল এখন বাজারে ৪০ টাকা কেজি। মান অনুযায়ী চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৭০ টাকা। মাসখানেক আগেও চালের কেজি সর্বনিম্ন ৩৫ টাকা ছিলো।
জিরার দাম কেজিতে ৪০-৫০ টাকার মতো বেড়েছে। দারুচিনির দাম বেড়েছে ১০-১৫ টাকা। আদা কেজি ৯০ থেকে এখন ১২০ টাকায় এবং শুকনা মরিচের কেজি ২৩০ থেকে ৩৫০ টাকায় পৌঁছেছে।
আর রোজার মাসে ইফতারির প্রধান অনুষঙ্গ খেজুরের দাম প্রকার ভেদে ১০০ থেকে ১৩৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। রসুন ১১৫-১৪০ এবং পেয়াজ ৩৪/৩৫ টাকা, আলু ১৮-২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
তবে, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬০০ টাকা দাম ধার্য করে দিলেও হাড়সহ গরুর মাংস ৭৫০ এবং হাড়ছাড়া ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচামালের বাজারে সব ছাড়িয়ে কাঁচা মরিচ। যেখানে দু’থেকে তিনদিন আগে কাঁচা মরিচের বাজার ধর ছিল ৪০ টাকা তা এখন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০টাকা। সিম কয়েকদিন আগেও প্রতি কেজি ৭০/৮০ টাকায় বিক্রি করা হলেও। শুক্র ও শনিবার প্রতিকেজি ১২০ টাকায়ও মিলেনি। শসার দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। আগে যেখানে প্রতিকেজি পাওয়া যেতে ৩০/৩৫ টাকায়, সেখানে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। বেগুন আগে ২৫/৩০ টাকায় পাাওয়া গেলেও রমজানের শুরুতেই এর দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি কেজি ৩৫/৪০ টাকা কেজি। চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫/৫০ টাকায়। কয়েকদিন আগে প্রতি কেজির পাওয়অ গেছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। গোয়ালগাদ্দা সিম বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৪০/৪৫ টাকায় যা আগে পাওয়া গেছে ৩০/৩৫ টাকায়। আলু গাজর ইত্যাদির দামও কেজি প্রতি বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। ভালো মানের টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২৫/৩০ টাকা কেজি। সাধারণ মানের টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়।
নগরীর লালবাজারের কাঁচামালের ব্যবসায়ী আল-আমিন বলেন, রমজানের শুরুতে পাইকারি ব্যবসায়ীরা সংকট দেখিয়ে চড়া দাম রাখেন। তাই আমরা ১০/৫ টাকা বাড়তি দামেই বিক্রি করা দোষের কিছু দেখি না।
খুচরা ব্যবসায়ী আমির আলী বলেন, বিভিন্ন কোম্পানির ডিলাররা চাহিদা অনুযায়ী ভোজ্য তেল সরবরাহ করছেন না। একারণে বাজার থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনে বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া হঠাৎ করে পাইকারি বাজারে সব পণ্যেরই দাম বেড়েছে।এদিকে সিলেটে নিত্যপণ্যে সিন্ডিকেট কব্জা থেকে মুক্ত রাখেতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন।
এব্যাপারে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসন (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বলেন, সিলেট মহানগর এলাকা বাজার মনিটরিংয়ে ৪টি টিম নামানো হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একাধিক টিম বাজার মনিটরিং করবে। পুরো মাস জুড়ে মাঠে থাকবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা পর্যায়ে মোবাইল কোর্ট টিম। এছাড়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মাঠে কাজ করবো। খাদ্যের গুণগত মান, মূল্য, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় রেখে অভিযান চালানো হবে।
সিলেট প্রতিদিন