‘টিসিবির পেছনে লাইন দেওয়া একপ্রকার ভিক্ষাবৃত্তি’
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ মার্চ ২০২২, ১০:৫১ অপরাহ্ণ
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, দেশের দ্রব্যমূল্য শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় চলে গেছে। টিসিবির পেছনে লাইন দেওয়াটা একপ্রকার ভিক্ষাবৃত্তি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে সে জন্য দুই কোটি পরিবারকে রেশনিংয়ের আওতায় আনতে হবে। হকার উচ্ছেদ না করে মানবিক হতে হবে।
জাতিকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করবেন না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আজ সোমবার বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি আয়োজিত ‘মুক্তি কোন পথে, কত দূর, স্বাধীনতা কি সুরক্ষিত?’ শিরোনামে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বিরোধী দল একটা ন্যায্য আন্দোলন করছে। আপনিও নিশ্চয়ই দ্রব্যমূল্য কমাতে চান, পারতাছেন না। এইটা আপনার ব্যর্থতা। সেখানে তাদের আক্রমণ করছেন। এইটা ভুল কাজ। বিএনপির বিভিন্ন আন্দোলনে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের কিছু ক্যাডার বাহিনী মিলিতভাবে বিরোধী দলকে আক্রমণ করছে। এ করে কখনো টিকে থাকা যাবে না। ‘
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ কোনো একক ব্যক্তির নয় উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘সেটা অনেকের ইনপুট সমৃদ্ধ ভাষণ। বিশেষ ইনপুট হচ্ছে সিরাজুল আলম খানের। ‘
তিনি বলেন, ‘দেশের ৯০ ভাগ লোক ইসলামী মূল্যবোধসম্পন্ন। তাদের অনুভূতিকে অবহেলা করে কিছু করা সমীচীন নয়। হিন্দু ধর্ম নিধন আল্লাহর নির্দেশ নয়। হিন্দু-মুসলিমরা পাশাপাশি থাকবে। নামাজ না পড়লে অমুসলিম, সেটা বলা অনুচিত। সেটা আল্লাহ নির্ধারণ করবেন। হজরত আয়েশা (রা.) হচ্ছেন সারা পৃথিবীর জোয়ান অব আর্ক। ৬০ হাজার উটের বহর নিয়ে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ধর্ম আমাদের আলোকিত করে, নৈতিকতা শেখাতে হবে। ভালো মুসলিম হতে হলে আল্লাহর বাণীকে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। ‘ পঞ্চম শ্রেণি থেকে আরবি ভাষা শিক্ষা চালুর আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন বলেন, ‘সরকার সময়ের অপব্যবহার করে জিয়া-ভাসানীর নাম পাল্টে দিয়েছে। মেধার অপব্যবহার করে নির্বাচন কমিশন গঠনকে কলুষিত করেছে। গঠনমূলক পরিবর্তনে নৈতিকতা লাগে। আজকে কোথাও নৈতিকতা, আদর্শ নেই; কিন্তু অবৈধ টাকার অভাব নেই। ঘুম থেকে জাগলেই দ্রব্যমূল্য বাড়ে। শিক্ষাব্যবস্থা ধসে পড়েছে। ২২ যাবে ২৩ আসবে, সরকার জাদুর বাক্সের কেরামতিতে আবারও ক্ষমতায় থাকবে। সেই জাদুর বাক্সের নাম ইভিএম। এটা হতে দেওয়া যায় না। ‘
গণ-অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘এ দেশে জ্ঞানী-গুণীদের কদর হয় না। কদর হয় চামচাদের। বিগত সময়ে যেই গিয়েছে লঙ্কায় সেই হয়েছে রাবণ। মুখে আমরা ধর্মের কথা বলি; কিন্তু কাজে সেটা খুঁজে পাওয়া যায় না। শত শত আলেম-উলামা আজকে জেলে। তাদের মুক্তির ব্যাপারে আমরা নিশ্চুপ। ‘
তিনি আরো বলেন, ‘৫০ বছরে বিদেশি প্রভুদের সহায়তায় সাম্প্রদায়িক-অসাম্প্রদায়িক, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বিপক্ষের শক্তি নামে বিভক্ত করে রেখেছে। সেই বিদেশি শক্তির মদদে এ দেশ থেকে ইসলামকে মুছে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। আগামীতে বাংলাদেশের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন। শেখ হাসিনার পতনের জন্য, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যারাই মাঠে থাকবে আমরা তাদের সাথে থাকব। ‘
সভায় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহের, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।