লাখাইয়ে অনেক রাজনীতিবিদের জন্ম: নেতাজীর পি এস অনঙ্গ কুমার রায়ের সংক্ষিপ্ত জীবনী
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:১৯:২৫,অপরাহ্ন ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২
লাখাই প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় অনেক রাজনীতিবিদের জন্ম হয়েছে। হয়তো অনেকের কাছে অজানা। একজন রাজনীতিবিদ হলেন এডভোকেট অনঙ্গ কুমার রায়। নেতাজী সুভাষ বসুর একান্ত সচিব ( পি এস) একজন জনপ্রিয় আইনজীবী, একজন লেখক, একজন রাজনীতিবিদ, একজন সমাজসেবক।
১৮৯৭ সালের ৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানার স্বজনগ্রামের (রাঢ় হাটি) কায়স্ত জমিদার পরিবারে এডভোকেট অনঙ্গ কুমার রায় জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর পিতা হবিগঞ্জ বারের বিশিষ্ট আইনজীবি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জমিদার এডভোকেট চন্দ্র কুমার রায়। সভ্রান্ত কায়স্ত বংশ ছিলেন। এই জমিদার কায়স্ত রাঢ় বর্ণের ছিলেন।
১৯১৩ সালে হবিগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এন্ট্রাস পাশ করেন।
১৯১৫ সালে সিলেট এম সি কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আই এ পাশ করেন।
১৯১৯ সালে রাষ্টবিজ্ঞান ও দর্শন বিষয়ে বি এ ( অনার্স) পাশ করেন।
১৯২১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এ পাশ করেন।
১৯২৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন পাশ কলকাতা হাইকোর্টে যোগদান করেন। কংগ্রেসের রাজনীতিতে যোগদান করেন।
শরৎ চন্দ্র বসুর মাধ্যমে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর সাক্ষাত ঘটে অনঙ্গ কুমার রায়ের। এরপর থেকে নেতাজীর সাথে ঘনিষ্ঠতা হয়। নেতাজী তাকে একান্ত সচিব দায়িত্ব দেন।
১৯৩৭ সালে শরৎ চন্দ্র বসু ছোট ভাই নেতাজীর জন্য “ওয়ান্ডারার সেভন” গাড়ী কিনেন। এই গাড়ীটি অনঙ্গ কুমার রায়ের পছন্দে কেনা হয়েছিল।
১৯৩৯ সালের ৭ নভেম্বর ভারতবর্ষের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর হবিগঞ্জ মহকুমা শহরে আগমন ঘটে। নেতাজীর হবিগঞ্জ আসার ক্ষেত্রে বিশেষ ভুমিকা ছিল এডভোকেট অনঙ্গ কুমার রায়ের।
১৯৪১ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইংরেজ সরকার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুকে গৃহবন্দী করলে এডভোকেট অনঙ্গ কুমার রায়কেও নজরবন্দী রাখা হয়।
নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর লেখা তাঁর বিখ্যাত আত্নজীবনী Indian pilgrim এবং Indias Struggle for freedom বইগুলো এডভোকেট অনংগ কুমার রায়ের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্তান ভাগ হলে এডভোকেট অনংগ কুমার রায় কলকাতা থেকে সিলেট চলে আসেন। সিলেট জেলা বারের একজন জনপ্রিয় আইনজীবি হিসেবে পরিচিত লাভ করেন।
১৯৬৯ সালের ১৮ জুন সিলেট শহরে হাওয়া পাড়া বাসায় মৃত্যুবরন করেন।
লাখাই থানার ১ নং লাখাই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের স্বজনগ্রামে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) দুটি বিল্ডিং আছে, যাহা রাস্তা পাশে অকেজো অবস্থায় দাড়িয়ে আছে। এই বাড়িটি এডভোকেট অনঙ্গ কুমার রায়ের জমিদার বাড়ী ছিল।
বৃটিশ আমলে স্বজনগ্রাম ফুটবল খেলার মাঠে জমিদার এডভোকেট চন্দ্র কুমার রায় বিশাল সাংস্কৃতিক অনুষ্টান,পালা গান,যাত্রা গানের আয়োজন করতেন।দুর দুরান্ত থেকে লোকজন এসে অনুষ্টান উপভোগ করতেন।বর্ষাকালেহ দৌড়ের নৌকা বাইচের
প্রতিযোগিতা করতেন। এই জমিদার বাড়ীর লোকেরা সারা বছর সাংস্কৃতিক অনুষ্টান নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন।