পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে মৌলভীবাজারে জমে উঠেছে মাছের মেলা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ৬:৩৩ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, নিজস্ব প্রতিবেদক :
পৌষ-সংক্রান্তি উৎসব উপলক্ষে বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজার জেলার শেরপুরে, কুলাউড়া,কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, রাজনগর, বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বসেছে মাছের মেলা। সকাল ১০টা থেকে কমলগঞ্জের মুন্সীবাজার, ভানুগাছ বাজার, শমশেরনগর, আদমপুর ও শহীদনগর বাজারে বসা মাছের মেলায় বিভিন্ন জাতের বড় আকারের মাছ সাজিয়ে বসেন মাছ বিক্রেতারা।
এছাড়া হাকালুকি হাওর সংলগ্ন বাজারগুলো ও কুশিয়ারা, মনু নদীর পাড়ে বসেছে বিশাল মাছের মেলা। সৌখিন ভোজন রসিকরা জাতি ধর্ম নির্বিশেষে এ মেলা থেকে হাজার হাজার টাকার মিঠা পানির বড় মাছ কিনে বাড়ি ফিরছেন। পৌষ মাসের শেষদিনটি পৌষ সংক্রান্তি হিসেবে এ অঞ্চলে পরিচিত। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পৌষ সংক্রান্তি মকর সংক্রান্তি হিসেবে পালিত হয়। ঢাকা অঞ্চলে এ দিনে দধি সংক্রান্তি হিসেবে পালিত হয় এবং সবাই পিঠা পায়েস নিরামিশ খাবার খেলেও সিলেট অঞ্চলে বড় বড় মাছ সাথে চুঙ্গা পিঠা ও বাহারি নানা পিঠা দিয়ে আত্মীয় স্বজন এবং অতিথিদের আপ্যায়িত করা প্রচলন দীর্ঘদিনের।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শমশেরনগর বাজারে মাছের মেলা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি মাছের দোকানে বড় আকারের মাছ সাজিয়ে রাখা হয়েছে। মেলায় উঠেছে বোয়াল, বাঘ, চিতল, রুই, কাতলাসহ সব ধরনের মাছ। ৫ কেজি ওজন থেকে শুরু করে ২৫-৩০ কেজি ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে মেলায়। সহজে হাট-বাজারে পাওয়া যায় না- এমন মাছও সাজিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে। প্রতিটি মেলায় বেশ চড়া দাম হাঁকাচ্ছেন মাছ-বিক্রেতারা। শমশেরনগর বাজারের মাছ বিক্রেতা মুকুল মিয়া জানান, ২৭ কেজি ওজনের বাঘ মাছ নিয়ে বসেছেন। পৌষ সংক্রান্তির দিনে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে কয়েক কোটি টাকার মাছ কেনা বেচা হয়ে থাকে প্রতি বছর।
ভানুগাছ বাজারের মাছ-বিক্রেতা আরমান মিয়া এবারের মেলায় ১৬ কেজি ওজনের বোয়াল মাছ ও ২০ কেজি ওজনের বাউশ (কাতল) মাছ নিয়ে বসেছেন। তিনি বোয়াল মাছটির দাম হাঁকছেন ১৫ হাজার টাকা। ক্রেতারা ওই মাছ ১০ হাজার টাকা বললেও তিনি মাছটি বিক্রি করেননি। কাতল মাছের দাম হাঁকছেন ১০ হাজার টাকা। মাছ ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর মিয়া জানান, ২২ কেজি ওজনের কাতল মাছের দাম ৪৫ হাজার টাকা হাঁকছেন। মাছটি ২৫ হাজার টাকা বলার পরও তিনি বিক্রি করেননি।
ক্রেতারা জানান, মেলায় নানা জাতের বড় আকারের মাছ উঠলেও দাম বেশ চড়া। বিক্রেতাদের সঙ্গে দরাদরি করে মাছ কিনে নিতে হয়। মাছ বিক্রতারা বলেন, দাম বড় কথা নয়। মূলত ক্রেতাদের আকর্ষিত করে মেলায় বড় আকারের মাছ সরবরাহ করা হয়। বেশ চড়া দাম বলা হলেও ক্রেতারা দরাদরি করে পরে সহনীয় পর্যায়ে হলে কিনে নিচ্ছেন।