শুরু হলো ২০২২: আসুক আলো
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জানুয়ারি ২০২২, ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
মহাকালের আবর্তে বিলীন হলো আরো একটি ইংরেজি বছর। সদ্য বিদায়ী ২০২১ সালের সব দুঃখ-বেদনা ভুলে আজ মধ্যরাতে বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বরণ করলো ২০২২ সালকে।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই রাজধানীর আকাশে আতশবাজি ও ফানুস উড়তে দেখা যায়। ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে। রাত ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই রাজধানীর বিভিন্ন বাড়ির ছাদ থেকে আতশবাজি, আলোকসজ্জা ও রঙ-বেরঙের ফানুসে আকাশ ছেয়ে যায়। এসবের মধ্য দিয়েই ইংরেজি নববর্ষ ২০২২ সালকে রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষ বরণ করে নেয়।
করোনাকালে খোলা জায়গায় বর্ষবরণের আয়োজন না করতে পুলিশের নির্দেশনা ছিল। এরপরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি, হাতিরঝিলসহ নানা এলাকায় সীমিত আকারে পালন করা হচ্ছে বর্ষবরণের আয়োজন।
করোনাভাইরাস মহামারির ছায়াতেই বিশ্বজুড়ে এবারও কোটি কোটি মানুষ নতুন বছরকে স্বাগত জানাচ্ছে। দুই বছর আগে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে বিশ্বজুড়ে ২৮ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষের দেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫৪ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
বিশ্বজুড়ে আবার গত অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। ওমিক্রন নামে করোনার আরএকটি ধরণ এরই মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে চলছে। করোনা ডেলটা এবং ওমিক্রনের সংক্রমনের কারণে অনেক দেশ ইংরেজি নববর্ষের উৎসব বাতিল করছে।
সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, করোনার তাণ্ডব কাটিয়ে ইংরেজি এ নতুন বর্ষ নতুন আলোয় উদ্ভাসিত হবে। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ফিরে আসবে আগেরই মতন স্বাভাবিক পরিবেশ। বিশ্বের অর্থনীতিসহ সামগ্রিক জীবনযাত্রায় ফিরে আসবে ছন্দ।
ইংরেজি নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠান উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বেশ কিছু নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। নির্দেশনায় থার্টি ফার্স্ট নাইটে ইংরেজি নববর্ষকে বরণ উপলক্ষে উন্মুক্ত স্থানে কোন অনুষ্ঠান না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে বিভিন্ন দেশে সকল ধরনের অনুষ্ঠান সীমিত আকারে পালন করা হচ্ছে। থার্টি ফার্স্ট নাইটে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে নির্ধারিত অনুষ্ঠানসমূহ উদযাপন করতে নগরবাসীদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায় এবং উন্মুক্ত স্থানে কোন ধরণের জমায়েত অথবা সমাবেশ বা উৎসব না করা এবং উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোন ধরনের অনুষ্ঠান, সমাবেশ, নাচ, গান ও কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। কোথাও কোন ধরণের আতশবাজি বা পটকা ফোটানো যাবে না বলেও নির্দেশনায় বলা হয়।
এদিকে ‘খ্রিষ্টীয় নববর্ষ-২০২২’ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
নববর্ষ মানেই সবার মাঝে জাগায় প্রাণের নতুন স্পন্দন, নতুন আশা ও নতুন সম্ভাবনা। বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পেছনে ফেলে নতুন বছরে অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাওয়া। স্বভাবতই নতুন বছর নিয়ে এবারও মানুষের প্রত্যাশা একটি করোনা মুক্ত বিশ্ব।
তবে, করোনার টিকা ছাড়াও অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনাসহ মানবসম্পদ তৈরির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হচ্ছে। গত বছরের মত চলতি বছরের মোটা দাগের চ্যালেঞ্জ। আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশ আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে, এটাই নতুন ইংরেজি বছরে সবার প্রত্যাশা।