ফেঁসে গেলেন দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ ডিসেম্বর ২০২১, ১:২৯ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের নাটঘরে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ২ খুনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টায় নিহত এরশাদুলের ভাই আকতারুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুর রশিদ জানান, মামলায় ১৫ জনকে এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইতিমধ্যে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে অন্য সংস্থাগুলোও কাজ করছে। ঘটনাটি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে অন্য সূত্র জানিয়েছে, মামলার আসামিদের তালিকায় দু’জন চেয়ারম্যান প্রার্থীও রয়েছেন। এরা হলেন- সজীব চৌধুরী (শামীম আব্দুল্লাহ) ও রফিকুল ইসলাম রতন।
এরা দু’জনই আসন্ন নাটঘর ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। ঘটনার পর থেকেই তারা পলাতক। নিহত এরশাদুলও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। মামলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীকে আসামি করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহত এরশাদুলের পিতা আবুল কাশেম। বলেন, এটা তো হওয়াই স্বাভাবিক। বুঝেন না। এদিকে এরশাদুলের ছোট ভাই আক্তারুজ্জামান চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তার পিতা বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কাশেম। তিনি জানান, রোববার সকালে পরিষদের সভা করে এ ব্যাপারে সকল সদস্যদের সম্মতি নিয়েছেন। তারাও রাজি হয়েছেন। বলেছেন আক্তারুজ্জামানকে জয়ী করতে তারা সবাই কাজ করবেন। আবুল কাশেমের ৪ ছেলে ও ৪ মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে আক্তারুজ্জামান তৃতীয়। তিনি কাতার প্রবাসে ছিলেন। শনিবার এই ইউনিয়নের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়। আগামী ৩১শে জানুয়ারি ভোট। নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা যখন তুঙ্গে তখনই শুক্রবার রাত ১০টার দিকে নাটঘর ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. এরশাদুল হক (৩৮) ও তার সহযোগী বাদল সরকার (২৭) দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুন হন।
এরশাদুল ওয়াজ মাহফিল থেকে একটি মোটরসাইকেলে বাড়িতে ফিরছিলেন। তাকে বহনকারী মোটরসাইকেলটি কুড়িঘর বাজারের পূর্ব পাশে জনৈক ছিদ্দিক মিয়ার বাড়ি সংলগ্ন রাস্তায় পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা গুলি করে। এতে মোটরসাইকেল চালক বাদল সরকারের (২৭) মাথায় গুলি লাগলে ঘটনাস্থলেই মারা যান বাদল। এরশাদুল হকের কানে ও গলায় গুলি লেগে গুরুতর আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করার পর রাত আড়াইটার দিকে তিনি মারা যান। প্রাথমিকভাবে পূর্ব বিরোধে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে জানা যায়। দু’তিন বছর পূর্বে গোষ্ঠীগত বিরোধে এরশাদের চাচাতো ভাই সাইদুল্লাহ খুন হন। ওই ঘটনার পর এরশাদের পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের বাড়িঘর লুটপাট করে এবং মামলা দেয়। এরশাদুল হক বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ২রা এপ্রিল নবীনগর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। কুড়িঘর গ্রামের আবদুল মালেককে প্রধান আসামি করে ২০ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা দেয়া হয়। সম্প্রতি এই মামলার আপস-রফার ব্যাপারে আলোচনা হয়। এ জন্য মোটা অঙ্কের টাকাও লেনদেন হয়। এরপর গত সপ্তাহে মামলার ২ নম্বর আসামি নান্দুরা গ্রামের আবু নাছের জেলে যান। আপস-আলোচনা এবং টাকা-পয়সা দেয়ার পরও নাছের জেলে যাওয়ায় নতুন করে বিরোধ উসকে ওঠে। এ ছাড়া নির্বাচন সামনে থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বীদের ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়।