সিলেটের মানুষ ব্যবহার করতে পারবেন শিলচর বিমানবন্দর
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ৩:৫০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
ভারতের আসামের শিলচরে নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হচ্ছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে আসামের মুখ্যমন্ত্রী বিমানবন্দরের নির্মাণ কাজের ঘোষণা দেবেন। এরই মধ্যে জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন কাজ শেষ হয়েছে। শিলচরে নতুন এই বিমানবন্দর নির্মিত হলে সিলেটের মানুষও এটি ব্যবহার করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সফরসঙ্গী হয়ে ঢাকায় আসা ডা. রাজদীপ রায়।
বুধবার রাতে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ঢাকার একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে বিজেপির এই সংসদ সদস্য এসব কথা বলেন। এসময় বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ সরকার বলছে, আসামসহ ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যের মানুষ চাইলে সিলেট বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারে। শিলচর, আসামসহ সাত রাজ্যের মানুষ সিলেট বিমানবন্দর ব্যবহার করবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিলচরের গ্রিনফিল্ড এয়ারপোর্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে জমি অধিগ্রহণসহ নানা প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।
সপ্তাহ খানেকের মধ্যে আসামের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্বশর্মা শিলচর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্পর্কে ঘোষণা দেবেন। এতে বরাক উপত্যকার লাখ লাখ মানুষ উপকৃত হবে। এর সঙ্গে মিজোরাম, মনিপুর, মেঘালয় ও ত্রিপুরার লোকজনও শিলচরের বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারে। সিলেটের লোকজনও শিলচর বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের যেকোনো দেশে যাতায়াত করতে পারবে।
সিলেটের মানুষ শিলচর বিমানবন্দর ব্যবহার করতে চাইলে আগে ভারতের ভিসা নিতে হবে। সেক্ষেত্রে আরেক জটিলতা দেখা দেবে।
দুই দেশের মধ্যে ভিসামুক্ত চলাচলের ব্যাপারে ভারত সরকার কিছু ভাবছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভিসামুক্ত চলাচল একসময় শুরু হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। শুধু ভারত-বাংলাদেশ নয়, নেপাল, ভুটান, ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে অদূর ভবিষ্যতে ভিসামুক্ত চলাচল শুরু হবে। এতে দেশগুলোর মানুষের মধ্যে ভাববিনিময় হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে।
সেক্ষেত্রে জঙ্গিবাদও বাড়তে পারে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ একটি বড় ইস্যু। এখন জঙ্গিবাদের ভয়ে যোগাযোগ বন্ধ হতে পারে না। জঙ্গিবাদ নিরসন করতে হবে।
ডা. রাজদীপ রায় বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে শুধু বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক না, দুই দেশের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন তৈরি হয়েছে। এর ফলে দুই দেশের চলমান সমস্যাও অনায়াসে নিরসন হবে।
মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে জয়ের ১০ দিন আগে ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে। অন্যদিকে চীন বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ-ছয় বছর পরে স্বীকৃতি দিয়েছে।
চীনের প্রসঙ্গ টানার বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. রাজদীপ বলেন, চীন চারদিক থেকে ভারতকে ঘিরে ধরতে চাচ্ছে। এজন্য তারা পাকিস্তানকে সঙ্গে নিয়েছে। এখন নেপাল ও শ্রীলঙ্কাকেও প্রায়ই তাদের সঙ্গে নিয়েছে। তারা এখন সঙ্গে নিতে চায় বাংলাদেশকে। চীন মনে করে, চারদিক থেকে ভারতকে ঘিরে ধরে রাখতে পারলে ভারত এ অঞ্চলে কোণঠাসা হয়ে থাকবে। এজন্য চীন এখন বাংলাদেশের দিকে গভীর মনোযোগ দিয়েছে। তবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। কোনো দেনা-পাওনার মধ্যে এ সম্পর্ক তৈরি হয়নি। একে অন্যের সহযোগিতায় দেশ দুটির মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
ডা. রাজদীপ রায় বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-বাংলাদেশ একসঙ্গে থাকলে এ অঞ্চলে অশান্তি হবে না। শান্তির পথে হাঁটবে। আর্থিক ক্ষেত্রেও অগ্রসর হবে। উন্নয়নের দিকে ধাবিত হবে জনপদ।