হারানো ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে শেরপুরে ঘোরদৌড় প্রতিযোগিতা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ৩:৪৩ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
গ্রাম বাঙলার ঐতিহ্য ‘ঘোরদৌড়’ খেলা। প্রাচীণ খেলাধুলার মধ্যে অন্যতম পুরনো এই খেলাটি কালের আবর্তে হারিয়ে যেতে বসেছে। মহান বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে সেই হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ধরে রাখার উদ্যোগী হয়েছেন বগুড়ার শেরপুর উপজেলার একদল যুবক। তাদের আয়োজনে হয়ে গেল তিন দিনব্যাপী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা।
সোমবার বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের সাতাড়া কুড়াতলা মাঠে অনুষ্ঠিত সমাপনী দিনে খেলাটির চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান চলে। এরআগে শনিবার ওই প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
সুঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন জিহাদের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, দফতর সম্পাদক আবিদ হাসান সুমন, ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জিন্নাহ প্রমুখ।
আয়োজক কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন জিহাদ জানান, গ্রাম বাঙলার ইতিহাস ঐহিত্য সমৃদ্ধ অনেক খেলাধুলাই ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে। প্রাচীন খেলার অন্যতম ঘোরদৌড় খেলাটিও প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাই সাতাড়া গ্রামের যুব সমাজের উদ্যোগে এই ঘোড়দৌড় খেলার আয়োজন করা হয়েছে। এবারের মতো সবার সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে প্রতিবছরের এই সময় এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।
মোজদার হোসেন, সোলায়মান আলীসহ বেশ কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি এ সম্পর্কে জানান, দেশের যুব সমাজ আধুনিকতার ছোঁয়ায় আজ তাদের নিজস্ব শিল্প সংস্কৃতি ভুলে যেতে বসেছে। আমাদের সংস্কৃতি তাদের সামনে তুলে ধরতেই যুব সমাজের উদ্যোগে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে তিনদিনব্যাপী এই ঘোরদৌড় প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে অর্ধশতাধিক ঘোড়া অংশ নেয়।
এ উপলক্ষে সাতাড়া কুড়াতলা মাঠে বসে গ্রামীণ মেলা। শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সী মানুষের জন্য জন্য নাগরদোলা থেকে শুরু করে গ্রামীণ ঐহিত্যপূর্ণ রকমারি খাবার পাওয়া যায় মেলায়। আয়োজন কমিটির পক্ষ থেকে সমাপনী দিনে প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে জয়ীদের বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু বলেন, সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না গ্রাম বাঙলার ঐতিহ্যগুলো। ফলে গ্রাম বাঙলার এতিহ্যগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। অথচ এগুলো একটি দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে বহন করে। তাই এগুলো রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। হারানো অতীতকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তবেই দেশ সমৃদ্ধশালী হবে। জাতিও তার অতীত স্মরণ করবে। সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। আর গ্রাম বাঙলার হারানো সেই ইতিহাস-ঐতিহ্য ফিরে আনতে যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। এজন্য সবাইকে আরও সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।