বুক ভরা স্বপ্ন নিমেষে শেষ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা ৩ দিনের বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টির কারণে জেলার দেবিদ্বারে কৃষিজমি তলিয়ে যাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দুই হাজার ৭৯৩ হেক্টর আগাম রবি শস্য ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে জানায় স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুর রউফ।
তিনি বলেন, কৃষকের আগাম আলু ও শাক-সবজি জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
উপজেলার মোহনপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টিপাতে ভাসছে কৃষকের আমন ধান, সবজি ক্ষেত। তলিয়ে গেছে বোরো ধানের আগাম বীজতলা, আলু ও মসুর ক্ষেত। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে না বলে জানালের স্থানীয় কৃষকরা।
কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, এবার শাক-সবজির বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে বুক ভরা স্বপ্ন এক নিমেষে শেষ। এখন শুধু হতাশা।
দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে আগাম আলু ও নানা রকমের ৭৫০ হেক্টর সবজী আবাদ করা হয়েছিল। এর মধ্যে মুলা ৫৬ হেক্টর, লালশাক ৭৫ হেক্টর, ডাটা ৫৪ হেক্টর, লাউ ৭০ হেক্টর, ফুলকপি ৯৬ হেক্টর, বাধাকপি ৬০হেক্টর, টমেটো- ৮০ হেক্টর, পালং শাক ২৫ হেক্টর, শসা ২৫ হেক্টর, করলা ৩০ হেক্টর, ঢ্যাঁড়স ৩৬ হেক্টর, কাঁচা মরিচ- ৬৫ হেক্টর, ধনিয়া পাতা- ৮৫ হেক্টর, পেঁয়াজ- ২০ হেক্টর, রসুন ১০ হেক্টর, মিষ্টি আলু ১৫ হেক্টর ও ১২ টি বিষমুক্ত সবজির প্রদর্শনীসহ ২ হাজার ৭৯৩ হেক্টর জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
মোহনপুর ইউপির ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. বারেক মির্জা, মো. আলী হোসেন, মো. নাজমুল হাসান, মো. রুবেল মির্জা বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তারা মাঠে এবার প্রায় দুই একর জমিতে আলু চাষ, এক একর জমিতে ফুল কপি ও দুই একর জমিতে মিষ্টি কুমড়াসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করেছিলেন। তিনদিনের টানাবর্ষণে সবই এখন পানির নিচে। আমরা ক্ষুদ্র কৃষক, বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আবাদ করেছি।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুর রউফ জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্ন চাপের ফলে টানা বৃষ্টিতে চলতি মৌসুমে আবাদী ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ উপজেলায় প্রায় দুই হাজার ৭৯৩ হেক্টর কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জমিতে পানি আটকে থাকায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ভর্তুকির ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে।