সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে হচ্ছে দেশের প্রথম স্থায়ী মেডিকেল সেন্টার
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:০৭ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত তামাবিল স্থলবন্দরে হচ্ছে দেশের প্রথম স্থায়ী মেডিকেল সেন্টার। মেডিকেল সেন্টার স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যে স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, গণপূর্ত বিভাগ ও স্থলবন্দরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চলতি সপ্তাহে স্থানটি পরির্দশন করেছেন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশের ২৩টি স্থলবন্দরে মেডিকেল সেন্টার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরের মাধ্যমে এই কাজ শুরু হবে। তামাবিল ছাড়াও সিলেটের শেওলা ও জকিগঞ্জেও এ ধরনের মেডিকেল সেন্টার তৈরি করা হবে। তবে কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জে আপাতত এ ধরনের মেডিকেল সেন্টার করার পরিকল্পনা নেই।
ইতোমধ্যে তামাবিল স্থলবন্দরের মেডিকেল সেন্টার স্থাপনের জন্য ৩ হাজার ৫০০ স্কয়ার ফিট জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। মেডিকেল সেন্টারের জন্য নির্ধারিত স্থান পরির্দশন করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ ও লাইন ডাইরেক্টর) অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম, পিএসও (আইইডিসিআর) ডা. মো. সেলিমুজ্জামান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়, জেলা সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল, গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ কে এম সোহরাওয়ার্দী প্রমুখ।
এ সময় সংশ্লিষ্ট স্থলবন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দ্রুত পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা পাঠাতে বন্দর সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মেডিকেল সেন্টারটিতে কোডিভ স্ক্রিনিংয়ের পাশাপাশি স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম চালু থাকবে। ফলে স্থলবন্দরের যাত্রীদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও এ মেডিকেল সেন্টার ব্যবহার করতে পারবেন। মেডিকেল সেন্টারটি কমপক্ষে তিনতলা বিশিষ্ট হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট জেলার সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, ‘তামাবিল স্থলবন্দরে স্থায়ী বহুতল মেডিকেল সেন্টার স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের স্থলবন্দরে মেডিকেল সেন্টার স্থাপনের কাজ শুরু হবে। এ জন্য স্থলবন্দরের পাশে স্থায়ী জায়গাও নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরির্দশন করে গেছেন এবং হাসপাতাল নির্মাণের পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিকল্পনা পাঠানোর পর বাজেট হবে। বাজেট হয়ে গেলে মেডিকেল সেন্টার তৈরি করতে হয়ত ৬ থেকে ৭ মাস লাগবে। মেডিকেল সেন্টার হয়ে গেলে বন্দরের যাত্রীরা সেখানে সেবা পাবেন। অনেক সময় যাত্রীরা অসুস্থ বোধ করলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা পান না। এই সেন্টার হলে তারা সব সময় চিকিৎসা পাবেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও এই মেডিকেল সেন্টার থেকে সেবা নিতে পারবেন। এছাড়া টিকাকেন্দ্রসহ বিভিন্ন কাজে এই মেডিকেল সেন্টার ব্যবহার করা হবে।’
জকিগঞ্জ এবং শেওলা স্থলবন্দরেও এ ধরনের মেডিকেল সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভোলাগঞ্জে আপাতত মেডিকেল সেন্টার স্থাপনের কোনো পরিকল্পনা নেই। কারণ ওই বন্দর দিয়ে যাত্রী যাওয়া-আসা করেন না।’
চলতি বছর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে ভারতের করোনা পরিস্থিতি নাজুক হয়। এ অবস্থায় ২৫ এপ্রিল থেকে সিলেটসহ দেশের সব স্থলবন্দর বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। প্রায় পাঁচমাস বন্ধ থাকার পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় যাত্রী পারাপার। এদিকে, নতুন করে ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ায় সর্তক অবস্থানে রয়েছে দেশের স্বাস্থ্যবিভাগ। সিলেটের সব স্থলবন্দরের বিশেষ সতর্কবার্তা দিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।
সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, আফ্রিকাসহ যেসব দেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে সেখান থেকে ভারত হয়ে সিলেটে কোনো ব্যক্তি এলে তাকে ১৪ দিনের হোম কোয়ায়েন্টিনে রাখতে হবে। এছাড়া এখন থেকে ভারত থেকে কেউ এলে স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে তাকে দেশে প্রবেশ করাতে হবে। পাশাপাশি সব ইমিগ্রেশন সেন্টারকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।