গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে মৌলভীবাজারে আমন ধান ও শীতকালীন সবজির ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকরা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:৫৩ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, নিজস্ব প্রতিবেদক:
মৌলভীবাজারে ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে টানা তিন দিনের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে আমন ধান ও রবি ফসলের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় চরম দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। বৃষ্টির কারণে অনেক কৃষক জমি থেকে আমন ধান উত্তোলন করতে না পারায় ক্ষতির শঙ্কায় আছেন তারা। অন্যদিকে জমিতে পানি জমে শীতকালীন শাকসবজির ক্ষয়ক্ষতিরও আশঙ্কা করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরে ১৭ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়।
এরমধ্যে কৃষকেরা প্রায় ৬০ শতাংশ ধান কেটে ঘরে তুলেছেন। অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ ধান কাটা এখনও সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে ১ হাজার ৫শত ৮০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি ও ৫শ’২৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদ হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ধানের তেমন ক্ষতি না হলেও বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে সবজির ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
শমশেরনগরের কৃষক কনু মিয়া, আশিক আলী, পতনউষারের তোয়াবুর রহমান, হাজীপুর ইউনিয়নের আজাদ মিয়া বলেন, আমন উত্তোলনের শেষ সময়ে টানা বৃষ্টিপাতে কেটে রাখা ধান মাড়াই করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে স্তুপ রাখা ধানে পচন দেখা দিয়েছে। আবার সিদ্ধ করা ধানেও দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিপাতের কারণে গেল তিন দিনের বৃষ্টিতে ধান কাটা, মাড়াই, ধান শুকাতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে ক্ষেতের পাকা আমন ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে।
তারা আরও বলেন, শীতকালীন শাকসবজি বিশেষ করে আলু ক্ষেত ও সরিষা ক্ষেতের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হবে। ফুলকপি ও বাঁধাকপিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের কৃষক শাকের আলী বলেন, আমি ৪ একর জমির মধ্যে ২ একর আমন ধান ঘরে তুলেছি। আরও দুই একর জমির ধান কাটা বাকি রয়েছে। বৃষ্টির কারণে গেল দুইদিন ধরে ধান ঘরে তুলতে পারছিনা। জানিনা কি পরিমাণ ক্ষতি হবে।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও বৃষ্টির সাথে সাথে শীতের তীব্রতাও বৃদ্ধি পেতে পারে।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জনি খান জানান, বৃষ্টির কারণে আমন ধানের তেমন কোন ক্ষতি হবেনা। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে শীতকালীন সবজি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।