এক যুগেও হয়নি সড়ক-সেতুর পুনর্মিলন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ৪:০৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
নদীর বুকে এক যুগ ধরে দাঁড়িয়ে আছে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার একটি সেতু। এতে উপজেলার চিকাজানি ইউনিয়নের চর-ডাকাতিয়াপাড়া এলাকার দুই পাড়ের মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই।
জানা যায়, সড়কের মাঝে যমুনা নদী থাকায় ২০০৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর একটি সংযোগ সেতু নির্মাণ করে দেয়। এতে দুই পাড়ের মানুষের যাতায়াতের সময় অনেকটা কমে আসে। নির্মাণের কিছু দিন পর সেতুর দুই পাশের সড়ক বিকল হয়ে পড়ে। ফলে প্রায় ১২ বছর ধরে জনসাধারণের কোনো কাজে আসছে না সেতুটি।
সেতুটি সংস্কার না করায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নৌকায় অথবা অন্যত্র ঘুরে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে। সব থেকে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে স্কুলগামী ছাত্রছাত্রীদের। সমস্যা দীর্ঘ দিন অব্যাহত থাকায় বাধ্য হয়ে নিজেদের বসতভিটা পরিবর্তন করছেন অনেকে। অন্যত্র চলে যাওয়ার পরও বর্তমানে এখানে বসবাস করছেন প্রায় ৮ হাজার মানুষ।
অসহায়দের জন্য সরকারের আবাস্থল গুচ্ছু গ্রামের মানুষদেরও একই পথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। খানিকটা বাধ্য হয়েই পারাপার হচ্ছেন তারা। সেতু নির্মাণের পর এর দু’পাশে ২০০ মিটার করে মাটি ভরাট করার কথা থাকলেও মাটি ভরাট করা হয়নি। চলাচলের বিকল্প কোনো সড়ক না থাকায় সেতুর নিচ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় চলাচল করছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা প্রকৌশলী অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চিকাজানী ইউনিয়নের খালের ওপর ২০০৮ সালে সেতুটি নির্মিত হয়। নির্মাণের দুই বছর পর সেতুর উইং ওয়াল ও এর পাশের মাটি বন্যায় ভেঙে গেলেও এ পর্যন্ত সংস্কার করা হয়নি। ফলে এ সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে। এ সেতুটি মূলত জামালপুর প্রকল্পের একটি সেতু।
স্কুলগামী শারমিন নামে ৮ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি ছোট থেকেই সেতুটি এমন দেখেই আসছি। অনেকবার শুনেছি এটি সংস্কার করা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটি করা হয়নি।
দশম শ্রেণির আনার আলী নামে আরেক এক শিক্ষার্থী বলেন, সেতুটির দুই পাশের সড়ক বিকল থাকায় আমাদের প্রতিদিন নৌকায় পারাপার হতে হয়। বর্তমানে নৌকা ভাড়া ৫ টাকা দিতে হচ্ছে, বন্যার সময় এ ভাড়া বৃদ্ধি হয়ে ১০ টাকায় চলে যায়।
পশ্চিম কাজলা পাড়ার বাসিন্দা শহিতন, গুচ্ছু গ্রামের বাশিন্দা উমর ফারুক ও হাসমত আলীসহ আরো অনেকেই বলেন, নদী ভাঙনের পর আমরা এখানে বসবাস শুরু করি। কিন্তু চলাচলের সড়ক না থাকায় আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। আমাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হয়। যার কারণে আমাদের কম দামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।
চিকাজানী ইউপি চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার আগ থেকেই সেতুটি বিকল অবস্থায় পড়ে আছে। এর কারণে পশ্চিম কাজলাপাড়াসহ গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ বলেন, সেতুটি মূলত আমাদের এলজিইডি করেনি। এলজিইডি নির্মিত সেতু কোনো সমস্যা হলে আমরা দ্রুত সেটি মেরামতের চেষ্টা করি। মূলত এ সেতুটি একটি প্রকল্পের আওতায় তৈরি হয়েছিল। তাই আমাদের দফতরে সেতুটি মেরামতের সুযোগ নেই।