সিলেটে তিনদিনেও খুলছে না জোড়া লাশের রহস্যের জট
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১:০১ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেটের কানাইঘাটে একটি কমিউনিটি সেন্টারে বাবুর্চি ও তার সহযোগী নারীর রহস্যময় মৃত্যুর জট খুলছে না। ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পরও জোড়া লাশের মৃত্যুর ক্লু বের করতে পারছে না পুলিশ।
বদ্ধ ঘরে অক্সিজেন সংকটের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। কিন্তু অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার হওয়া অপর বাবুর্চি বলছেন তারা যে কক্ষে শুয়ে ছিলেন সেই রুমের জানালা ছিল এবং রাতে ওই জানালা কিছুটা ফাঁক করা ছিল। সেই অংশ দিয়ে অনায়াসে বাতাস আসা যাওয়া করতে পারে। তাহলে কীভাবে একটি কক্ষে দুইজন মারা গেলেন এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সিলেটজুড়ে।
অন্যদিকে একটি কক্ষে দুই পুরুষ বাবুর্চির সঙ্গে সহযোগী নারী ঘুমানোর বিষয়টিকে ভিন্নভাবে দেখছে মানুষ। তবে কী নারীজনিত কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
তবে পুলিশ বলছে, নিহতদের শরীরে কোনো আঘাতে চিহ্ন নেই। তাই বিষয়টি স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। এর আগে গত বুধবার সকালে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউপির গাছবাড়ী বাজারস্থ আনন্দ কমিউনিটি সেন্টারের একটি কক্ষ থেকে এক বাবুর্চি ও তার সহযোগী নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন, কানাইঘাট উপজেলার নয়াগ্রামের মৃত রহমত উল্লাহ’র ছেলে সুহেল আহমদ ও ওসমানীনগর উপজেলার তাহিরপুর গ্রামের মৃত আক্কাছ আলীর মেয়ে সালমা বেগম। এছাড়া অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার হওয়া বাবুর্চি হলেন কানাইঘাট উপজেলার ব্রাহ্মণগ্রামের নাজিম উদ্দিন।
জানা যায়, ঘটনাস্থল থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার হওয়া বাবুর্চি নাজিম উদ্দিন বিল্লালের জ্ঞান ফিরেছে। তিনি সিলেটের এমএজি ওসামানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নাজিম উদ্দিন পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন রাত তিনটার দিকে কমিউিনিটি সেন্টারের কাজ শেষ করে তারা তিন বাবুর্চি ও কনে পক্ষের দুইজনসহ পাঁচজন মিলে গরুর মাংস দিয়ে ভাত খান। পরে সহযোগী নারীসহ দুই বাবুর্চিসহ সেন্টারের একটি কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। বাকি দুইজন অন্য আরেকটি কক্ষে ঘুমান। এরপর আর কি হয়েছে কিছুই বলতে পারেন না তিনি। খাবারের সঙ্গে ডাল বা অন্যকিছুও খাননি তারা।
নাজিম উদ্দিন আরো বলেন, ঘুমানোর সময় কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমাই। তবে আমরা যে রুমে ঘুমিয়েছিলাম ওই রুমে জানালা ছিল এবং সে সময় জানালার গ্লাস কিছুটা ফাঁক করা ছিল। সেই ফাঁক দিয়ে পর্যাপ্ত বাতাস আসা যাওয়া করতে পারে।
কানাইঘাট থানার ওসি তাজুল ইসলাম শনিবার সকালে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি কয়েলের ধোঁয়া থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে। ওই ঘরে কোনো ভ্যান্টিলেটর ছিলো না। দরজা-জানালা দুটিও বন্ধ ছিলো। তাই ধারণা করা হচ্ছে অক্সিজেনের সংকটের কারণেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। তবে পুরো বিষয়টি ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে স্পষ্ট হবে।
নারীজনিত কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এরকম হওয়ার কথা না। কারণ তাদের শরীরে কোনো ধরণের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তাছাড়া যে হাসপাতালে ভর্তি সেও বলেছে এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।সুত্র-সিলেটপ্রতিদিন