বাবা-মায়ের ‘আত্মহত্যা’, কী হবে অসহায় দুই শিশুর
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ নভেম্বর ২০২১, ৮:৪৭ অপরাহ্ণ
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে গলায় ওড়না পেঁচানো স্বামী-স্ত্রীর আত্মহত্যার পর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে অসহায় দুই শিশু সন্তানের। কার কাছে মানুষ হবে, লেখাপড়া চালাতে পারবে না, কে খাওয়াবে পড়াবে- এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আত্মহত্যাকারী আ. রউফের বৃদ্ধ পিতামাতা। মা-বাবাকে হারিয়ে কান্না থামছে না অবুঝ দুই শিশুর।
এদিকে এ ঘটনা আত্মহত্যা নাকি হত্যা তার কোনো কূলকিনারা করতে পারছে না পুলিশ। তারা বলছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে। কারণ স্বামী-স্ত্রীর কারও শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্নও নেই।
চুনারুঘাটের নরপতি গ্রামের রিকশাচালক আব্দুর রউফ ও আলেয়া দম্পতির লাশ শুক্রবার সকালে উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার বিকালে লাশ দুটি পরিবারে কাছে হস্তান্তরের পর সন্ধ্যায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
রউফ ও আলেয়া দম্পতির ১০ বছরের ছেলের নাম রায়হান আহমেদ ও ছোট ছেলে ফরহাদ মিয়ার বয়স পাঁচ বছর। রায়হান ও ফরহাদ বর্তমানে দাদা-দাদির কাছে রয়েছে। আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে তাদের ভরণপোষণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
শিশুদের দাদা আবুল হোসেনের বয়স প্রায় ৫৬ এবং দাদি মনোয়ারা বেগমের বয়স ৪৫ বছর। বার্ধক্যজনিত কারণে দুজনেই বাড়ির বাইরে কোনো কাজ করতে পারেন না। শিশুদের বাবা আব্দুর রউফ রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতেন। মাঝে মধ্যে রিকশা চালান দাদা।
দাদি মনোয়ারা বেগম বলেন, রায়হান তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। এখন তার লেখাপড়া করানো দূরের কথা তিনবেলা খেতে দেওয়া আমাদের পক্ষে কঠিন। বয়সের কারণে আমি এবং তাদের দাদাও কোনো কাজ করতে পারি না। এখন তাদের কীভাবে বুঝিয়ে রাখব, কে দেখাশোনা করবে তাও জানি না।
শিশুদের দাদা আবুল হোসেন বলেন, চারপাশে এখন শুধু অন্ধকার। একদিকে ছেলে ও ছেলের বউয়ের চলে যাওয়া, অন্যদিকে নাতি-নাতনির ভবিষ্যৎ। কী করব কিছু বুঝতে পারছি না। অবুঝ এ দুই শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
এর আগে এ ঘটনায় মৃত আব্দুর রউফের বাবা আবুল হোসেন বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।
চুনারুঘাট থানার ওসি মো. আলী আশরাফ জানান, এখনো এ ঘটনার কোনো রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়নি। নিহতদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ধারণা করা হচ্ছে তারা আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে এলে বিস্তারিত জানা যাবে।