মৌলভীবাজারে পানির অভাবে আমন চাষ নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ আগস্ট ২০২১, ১১:২৬ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, নিজস্ব প্রতিবেদক:
মৌলভীবাজার জেলায় আমনের ভরা মৌসুমে পর্যাপ্ত পানির অভাবে চাষাবাদ মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। বর্ষার মৌসুমেও আশানুরুপ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমন চাষীদের মাথায় হাত। প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হওয়ায় আমন চাষীরা ফসলহানিরও আশঙ্কা করছেন। জেলার সাতটি উপজেলায় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কৃষকরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়ছেন। জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা পানির জন্য চাষাবাদ বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কার ব্যক্ত করেন।
জেলার কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, সদর উপজেলা,রাজনগর,বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার অধিকাংশ কৃষি জমি এখনও অনাবাদি রয়ে গেছে কৃষকরা জানান। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শ’শ’ একর জমি এখনও পতিত পড়ে রয়েছে। কেউ কেউ হালচাষ করলেও জমিতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় সঠিকভাবে চারা রোপন করতে পারছেন না। কারো জমিতে আমনের চারা রোপন করলেও জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। আশানুরূপ বৃষ্টিপাতের আশায় দিন কাটছেন অনেক কৃষক। ফলে আমন চাষাবাদ নিয়ে ভোগান্তিতে পরেছেন চাষীরা। করোনার মহামারির সময়ে এমনিতেই খাদ্য সংকটের আশঙ্কায় রয়েছে কৃষকরা। তার উপর আমন চাষাবাদ না করতে পারলে খাদ্য ঘাটতির শঙ্কায় দিন কাটছে আমন চাষীদের। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এমনটা হচ্ছে বলে স্থানীয় কৃষি সচেতন মহলের মনে করছেন।
কুলাউড়ার কৃষক নেতা সিপন মিয়া, ফয়জুল ইসলাম, রহমত আলী বলেন, এখন আষাঢ় শ্রাবণ মাস চলছে প্রাকৃতিক নিয়মে এখন বর্ষাকাল। তবে প্রকৃতিতে বর্ষার সেই চিরাচরিত রূপ এখনও দেখা যাচ্ছে না। নদী-নালা, পুকুর, জলাশয়ে এখনও পানি নেই। আবহাওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
কমলগঞ্জের পতনউষার ইউনিয়নের কৃষক তোয়াবুর রহমান বলেন, বর্ষার ভর মৌসুম। অথচ শ্রাবণ মাসেও আশানুরূপ বৃষ্টিপাত নেই। এটি আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব যা চাষাবাদকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। ফলে আমনের চারা রোপনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমাদেরকে। এসময় থেমে থেমে যে সামান্য বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তাতে চাষাবাদ উপযোগী পানি পাচ্ছেন না কৃষকরা। ফলে হাওর, নদী-নালা ও খাল-বিলের পানি নেই। সবাই তাকিয়ে আছি পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের জন্য।
শমশেরনগরের লাঘাটাছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লি: (পাবসস) এর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বৃষ্টির জন্য বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা এখনও জমিতে ধানের চারাই রোপন করতে পারছেন না। অনেকেই বৃষ্টিপাতের আশায় বসে রয়েছেন। কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন বলেন, বর্ষাকালে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হওয়া দরকার ছিল সেই পরিমাণ বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। তবে যেটুকু বৃষ্টিপাত হচ্ছে তাতেও কৃষকরা কিছু জমিতে আমন চাষাবাদ করতে পারছেন। তবে এখনও সময় আছে যেকোন সময়ে ভারী বৃষ্টিপাত হলেই কৃষকদের সমস্যা থাকবে না। জমিতে আমনের চাষাবাদ করতে পারবেন।