দোয়ারাবাজারের নদী-খালে দেশি মাছের আকাল
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জুলাই ২০২১, ২:১৫ অপরাহ্ণ
মনোরম আহমেদ:>>
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সানিয়া গ্রামের বাসিন্দা সুহেল মিঞা। গ্রামের একটি খালে বেল জাল দিয়ে মাছ ধরছেন বেশ কয়েক বছর ধরে। কিন্তু বর্তমানে সারাদিন খালে জাল পেতেও পাচ্ছেন না কাঙ্ক্ষিত দেশীয় মাছের দেখা। চলামান বর্ষা মৌসুমেও প্রায়দিনই শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে তাকে। এতে সুহেলেপর পরিবারে চলছে চরম দুর্দিন।
শুধু সুহেল নয় নদ-নদী, খাল-বিল এবং উন্মুক্ত জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত দেশীয় মাছ না পেয়ে উপজেলার অনেক জেলের পরিবারে এখন দুর্দিন চলছে। যার কারণে অনেক জেলে বাধ্য হয়ে পেশা পরিবর্তন করছেন।
সুহেল মিঞার সাথে কথা হলে তিনি জানান, কয়েক বছর আগেও গ্রামের খালগুলোতে দেশীয় মাছের প্রাচুর্য ছিলো। কয়েক ঘণ্টা জাল ফেললেই প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। এসব মাছের স্বাদও ছিলো দারুণ। কিন্তু এখন আর সেসব দেশীয় মাছের দেখা মেলে না। সারাদিন জাল ফেলে রাখলেও দুই’শ টাকার মাছ পাওয়া যায় না। তিনি পরিবার নিয়ে এখন কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। ভাবছেন সামনে হয়তো তার পেশা পরিবর্তন করবেন।
বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। জেলার প্রধান নদ-নদী ও খাল-বিল এবং পুকুর-দিঘি-ডোবা থেকে এরই মধ্যে অন্তত অর্ধশত প্রজাতির দেশীয় মাছ বিলুপ্তির পথে চলে গেছে। গত ১০ বছরের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি প্রজাতির মাছ পুরোপুরিভাবেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
এরই মধ্যে ‘নানদিয়া, রিঠা, বাচা, ছেনুয়া, গাওড়া, নাপতিনী, বুইতা’ ইত্যাদি প্রজাতির মাছ এ অঞ্চল থেকে পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এছাড়া ‘বাগাইড়, গোলসা, পাবদা, আইড়, নামাচান্দা, তারা বাইম, বড় বাইম, কালিবাউশ, দাঁড়কিনাসহ প্রায় অর্ধশত প্রজাতির মাছ রয়েছে বিলুপ্তির পথে। এ অঞ্চলে আগে যেসব দেশীয় প্রজাতির মাছ দেখা যেত, তার বেশির ভাগই এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এর ফলে বাধ্য হয়ে কৃত্রিম উপায়ে উৎপাদিত হাইব্রিড মাছ দিয়েই চাহিদা মেটাতে হচ্ছে মানুষকে।