সিলেটে দুই শিশুসহ মাকে গলা কেটে হত্যা : দুটি কারণ নিয়ে কাজ করছে পুলিশ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুন ২০২১, ৬:৪৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেটের গোয়াইনঘাটে দুই শিশুসহ মায়ের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উন্মোচনে দুটি ক্লু নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটি জব্দ করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা পারিবারিক কলহে অথবা মামার বাড়ির সম্পত্তির ভাগ নেয়া নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। এ দুটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েই তদন্ত কাজ চালাচ্ছে পুলিশ।
নিজ ঘরের বটির আঘাতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে ওই বটিসহ আরও কিছু জিনিসপত্র জব্দ করেছে।
বুধবার (১৬ জুন) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি দক্ষিণ পাড়ায় নিজবাড়ি থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন- গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি দক্ষিণ পাড়া গ্রামের হিফজুর রহমানের স্ত্রী আলিমা বেগম (৩৫) আট বছরের ছেলে মিজানুর রহমান ও তিন বছরের শিশুকন্যা তানিশা বেগম। এ সময় আহত অবস্থায় নিহতের স্বামী হিফজুর রহমানকে (৩৮) উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভর্তি করা হয়েছে। তবে তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।
খবর পেয়ে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিনসহ পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এ বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘দুটি সম্ভাব্য কারণকে সামনে রেখে পুলিশ কাজ করছে। এর একটির হচ্ছে পার্শ্ববর্তী রাধানগর গ্রামে শ্যালিকার বিয়ে নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর ঝগড়া। আরেকটি হিফজুর রহমান তার মামার বাড়িতে থাকেন। মায়ের সম্পত্তির ভাগ মামার বাড়ি থেকে আদায় নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এ দুটি কারণকে সামনে রেখে মামা-মামিসহ আশপাশের অন্তত পাঁচ থেকে ছয়জনকে আমরা প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আশা করছি খুব শিগগিরই আমরা এই হত্যাকাণ্ডের ক্লু উদঘাটন করতে পারব। পুলিশের একাধিক বিভাগের লোকজন এ নিয়ে কাজ করছে।’
স্থানীয়রা জানান, সকালে প্রতিবেশীরা হিফজুর রহমানের ঘরের ভেতর থেকে গোঙানির শব্দ পান। ডাকাডাকি করা হলেও কেউ সাড়া দিচ্ছিলেন না। ঘরের দরজা খোলা পেয়ে প্রতিবেশীরা ভেতরে ঢুকে চারজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তাদের ঘাড়ে ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। মা ও দুই শিশু মৃত ছিলেন। আহত হিফজুরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আহাদ বলেন, ‘ডিআইজি ও জেলা পুলিশ সুপার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তাদের নির্দেশনায় কাজ করা হচ্ছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘যে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে এই বটি নিহতদের ঘরেরই। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে হত্যাকারী পরিবারেরই কেউ হতে পারেন। তবে আমরা এখনো নিশ্চিত নই।’
নিহতদের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।