একজন কামরানের জন্য এখনো তাদের কান্না
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ জুন ২০২১, ৯:৩১ অপরাহ্ণ
এনামুল কবীর:
সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের জন্য আজো কাঁদেন ‘তারা’। ‘তারা’ মানে সিলেটের সাধারণ মানুষ।
গণমানুষের নেতা প্রিয় কামরানের মৃত্যুর এক বছর হয়ে গেলেও এখনো তিনি সাধারণ মানুষের মনে বেঁচে আছেন শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায়। রাজনীতির সাথে জড়িত এই মানুষটি দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়।
হবেনইবা না কেন? তিনিতো তাদের সুখে দুখে পাশেই ছিলেন আমৃত্যু। জনপ্রতিনিধি হিসাবে যেমন তেমনি সাধারণ রাজনীতিবিদ হিসাবেও।
কেউ যে তার কাছে কোন কাজে গিয়ে নিরাশ হয়ে ফিরেছেন, এমনটা খোঁজে পাওয়া খুব কঠিন। সবার সব কাজে সাধ্যমতো তার সহযোগীতার হাত ছিল প্রসারিত।
নগরীর একাধিক প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার সেকশনে কাজ করেন- বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা মিলন মিয়ার (২৮) কথাই ধরুন। ক’বছর আগে কঠিন অসুখে পড়েছিলেন। তার আর্থিক সামর্থ্য তেমন একটা ছিলনা। প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে সাহায্যের জন্য আবেদন করবেন। সুপারিশ প্রয়োজন। ছুটে গেলেন সিলেটের এক বর্ষিয়ান আওয়ামী লীগ নেতার কাছে। তিনি হতাশ করলেন। সুপারিশতো করলেইনা, উল্টো কঠিন দু’কথা শুনিয়ে দিলেন।
একরাশ হতাশাতাড়িত অবস্থায়ই গেলেন বদর উদ্দিন আমহমদ কামরানের বাসায়। সহাস্যে তিনি তার আবেদনে সুপারিশ করার পাশাপাশি খুঁটিনাটি আরও অনেক পরামর্শ দিয়ে ব্যক্তিগত সহকারীকে সিলছাপ্পড় দিয়ে দেয়ার নির্দেশও দিয়ে তারপর একসভার উদ্দেশ্যে ঘর ছেড়ে বেরিয়েছিলেন। মিলন মিয়া বললেন, এমন সহযোগীতা পরায়ন একজন নেতা পাওয়া বড়ই কঠিন। আমি তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
শুধুই কি মিলন? না। কামরানের কাছে এমন সহযোগীতা পেয়েছেন আরও প্রচুর সামর্থ্যহীন মানুষ। নগরীর ছড়ারপার এলাকায় কামরানের বাসা। ঐ এলাকারই একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম (৪৫)। বললেন, সকাল থেকে তার বাসায় সেবাপ্রার্থীদের লাইন পড়ে যেতো। সবাই যেতেন নিজেদের সমস্যা নিয়ে। যার সমাধান তার পক্ষে সম্ভব তিনি তা তাৎক্ষনিক করে দিতেন। যেটি সম্ভব নয়, তার জন্যও ভালো পরামর্শ দিয়ে দিতেন। তাঁর অমায়িক এবং সুন্দর ব্যবহার থেকে অনেক কিছু শেখার আছে, বিশেষ করে রাজনীতিবিদদের।
কামরান সবমহলেই জনপ্রিয় ছিলেন। রাজনীতির মধ্যেই ছিলেন। ব্যস্ততাও ছিল প্রচুর। এতএত ব্যস্ততার মধ্যেও সাধারণ মানুষের জন্য তিনি ছিলেন একজন নিবেদিত প্রাণ মানুষ। আর তাই তারাও মনে রেখেছেন তাকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়
আজ মঙ্গলবার ( ১৫ জুন ) তাঁর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। দিনটি উপলক্ষে গত কয়েকদিন থেকেই বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে কামরানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া, মিলাদ মাহফিল, কাঙালীভোজ ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসবের মাধ্যমে এজন গণমানুষের প্রিয়া নেতার প্রতি তাদের ভালোবাসার জানান দিচ্ছেন সিলেটবাসী।
সূত্র: সিলেট প্রতিদিন