ওসমানীনগরে শ্যুটিংয়ের নামে দেদারছে চলছে বেহাপনা: নিরব প্রশাসন
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জুন ২০২১, ৯:১২ অপরাহ্ণ
ওসমানীগর প্রতিনিধি:
করোনার ২য় দফার লকডাউনের মধ্যেও সিলেটের ওসমানীনগরে থামছে না অননুমোদিত নাটক, টিকটক, লাইকি এবং গানের শ্যুটিংয়ের নামে বেহাপনা মূলক কার্যকলাপ। সংক্রমণ রোধে সরকার কর্তৃক জারীকৃত বিধি নিষেধের তোয়াক্কা না করে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কথিত অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জড়ো করে উপজেলার আনাছে-কানাছে অননুমোদিত ইউটিউব,টিকটক,লাইকি ও ফেসবুকভিত্তিক চ্যানেলের শ্যুটিংয়ের নামে দিন দুপুরে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ।
অভিযোগ উঠেছে,স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ সার্বিক বিষয় জেনেও অদৃর্শ্য কারণে নিরব ভূমিকা পালন করছে। ফলে অননুমোদিত ইউটিউব, টিকটক, লাইকি ও ফেসবুকভিত্তিক চ্যানেলের সংশ্লিষ্ট তত্বাবধায়করা হয়ে উঠেছেন আরও বেপরোয়া।স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো প্রকার শু্যুটিং পরিচালনা করার পূর্বে জেলা প্রশাসক কিংবা স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নেয়ার বিধান থাকলেও কোনো প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে লকডাউনের মধ্যে উপজেলার নিজ কুরুয়া এলাকায় আঞ্চলিক নাঠকের শ্যুটিংয়ের নামে প্রায় প্রতিদিনই বহিরাগত লোকজনকে জড়ো করে দেদারছে চলছে উঠতি বয়সের যুবক-যুবতিদের অভিনয়ের নামে অশালিনতার মঞ্চ। কথিত এসব শ্যুটিং মঞ্চে অবাধে মাদক আদান-প্রদান ও গ্রহণের অভিযোগও দীর্ঘদিনের।
এছাড়া শ্যুটিংয়ে জড়িত থাকা কথিত এসব অভিনেতা-অভিনেত্রীর অনেকেই মাদকসেবী ও নানা অসামাজিক অপরাধের সাথে লিপ্ত থাকায় শ্যুটিং স্পট এলাকায় বসাছেন মাদকের অসর চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকে জানিয়েছেন। শ্যুটিং স্পটগুলোতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার কথিত অভিনেতা অভিনেত্রীরা জড়ো হওয়ায় স্বাস্থ্য বিধি উপেক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি আশঙ্কা বাড়ছে করোনা ছড়িয়ে পড়ার।হচ্ছে সামাজিক অবক্ষয়ও।শনিবার উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মহানগর পেট্ট্রোল পাম্পের পিছনে নিজ কুরুয়া এলাকায় অনুমোদনহীন ইউটিউব ও ফেসবুকভিত্তিক চ্যানেলের শ্যুটিং চলাকালিন সময়ে স্থানীয়রা বিষিয়টি বার বার থানা পুলিশকে অবগত করলেও নানা কায়দায় পুলিশ বিষয়টি এড়িয়ে গেছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট অনেকের।
স্থানীয় প্রশাসনের রহস্যজনক ভূমিকায় বিকৃত শরীরি আচরণ, কটাক্ষ, ইভটিজিংকে প্রাধান্য দিয়ে তৈরি কথিত ভাঁড়ামির নাটকগুলো যুবসমাজকে ঠেলে দিচ্ছে নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে। ভাঁড়ামির এসব নাঠকের নাটকের নাম সচেতণ মহল মুখে আনতে লজ্জা পেলেও একশ্রেনীর লোকেরা আবার এসব পছন্দও করছেন! যেমন মরা জিতায় কারবার, আগা মোটা, ঘুমও বিয়া অইছে, ফুয়ায় বাফ ঢাকেনা, বিয়াতি ইডিওট,আগা তুমার-গুড়ি আমার, ভাতিজা আবুল হাসেম, বেন্দা ইডিওট, ঢিলা হাসিম, বুড়ির লগে পুরি গেলো, জুতা, কিতা লাটা লাগলো, রাইতকুর কামলা, একি অঙ্গে কতো রুপ, তিলিছ মাতর টুকরা,মাউগা, রাইতুর মেহমান,খেট-খেটা মদরিছ,বউ আটকি গেছে,নটি বাড়ি,মাঝর বেন্দা,রোজায় ধরিলিছে,বাঁশ ফাতাইর,ফাটা বাঁশ,ও ফুরি তর নাম কিতা, তোমার বউ সুন্দর, ইজ্জত লুটিলা।জানা গেছে, স্থানীয় এক শ্রেণীর বখাটে নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপকে ঢেকে রাখতে আঞ্চলিক নাটকের নামে দীর্ঘদিন ধরে এসব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সূত্র জানায়,সিলেটের আঞ্চলিক নাটকের বিতর্কিত অভিনেতা রাসেল হামিদ ওরফে কাট্টুস আলী, আল্লাহকে নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য উপস্থাপনকারী সাহেদ মোশাররফ ওরফে কটাই মিয়া,খাদিমপাড়ার আকরাম দেশের বিভিন্ন এলাকার কথিত অভিনেতা অভিনেত্রী ও মডেল নিয়ে এসে করোনাকালে সিলেট শহরসহ ওসমানীনগর ও পাশর্^বর্তী উপজেলাগুলোতে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া শ্যুটিং পরিচালনা করে আসছেন।অভিনেতা রাসেল হামিদ ওরফে কাট্টুস আলী ওসমানীনগর মহানগর পাম্পের পেছনে নিজ কুরুয়া এলাকায় তার মামার বাড়িসহ আশপাশ এলাকায় বহিরাগত লোকজনকে জড়ো করে নিয়মিত শ্যুটিং পরিচালনা করে যাচ্ছেন।সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার স্বাস্থ্য বিধির উপর জোর দিলেও ওসমানীনগরে কথিত নাঠকের শ্যুটিংগুলোর ক্ষেত্রে সরকারের কোনো নির্দেশনা মানার প্রয়োজন মনে করছেন বেআইনী ভাবে শ্যুটিং পরিচালনাকারীরা।থানা পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসন অননুমোদিত এই শ্যুটিং স্পটগুলোর খবর নেয়ার প্রয়োজন মনে করছেন না বলে অভিযোগ স্থানীয় বিজ্ঞজনের।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ শ্যামল বনিক বলেন,সরকারের নির্দেশনার বাহিরে গিয়ে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া শ্যুটিংয়ের খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি টিম নিজ কুরুয়া এলাকায় গিয়ে শ্যুটিং পরিচালানা না করার জন্য নিষেধ করেছে। থানা এলাকায় কেউ এসব শ্যুটিংয়ের আয়োজন করলে পুলিশ তা কঠোর হস্থে দমন করতে প্রস্তুত রয়েছে।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা: তাহমিনা আক্তার বলেন,বিষয়টি আমার জানা নেই।সংক্রমন ঠেকাতে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বিধি নিষেধ গুলোর বাহিরে গিয়ে কেউ কোনো আয়োজন করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া নিজ কুরুয়া এলাকায় শ্যুটিং পরিচালনা বিষয়ে দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।