আজ মাহমুদ উস সামাদের স্বপ্নের মডেল মসজিদ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ জুন ২০২১, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
নান্দনিক নির্মাণ শৈলীতে তৈরি দক্ষিণ সুরমা উপজেলা মডেল মসজিদের কাজ শেষ হয়েছে ইতোমধ্যে। এখন উদ্বোধনের প্রহর গুণছেন উপজেলাবাসী। আজ ১০ জুন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মসজিদটি উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে নির্মাণাধীন এ মসজিদের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন মরহুম সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। তাঁর হাতে গড়া মসজিদের উদ্বোধন দেখে যেতে পারেননি তিনি নিজে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদ স্থাপনে জায়গা স্বল্পতার কারণে একসময় মসজিদ নির্মাণ অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল। তিনি প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তরের কাজ শুরু করান।
এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি, দ্রুতই এগিয়ে চলে নির্মাণ কাজ। মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর হওয়ার পর যতবার তিনি উপজেলার কোন অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ততোবারই তিনি মসজিদের নির্মাণ কাজ তদারকি করেছেন। তিনি মৃত্যুবরণ করার একমাস পূর্বেও মসজিদের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। এসময় মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী উপস্থিত সুধীজনদের বলেছিলেন, মসজিদটি উদ্বোধনের পর মুসল্লীরা এখানে নামাজ পড়বে, ধর্ম নিয়ে আলোচনা করবে, ইসলামিক সংস্কৃতিচর্চা করবে যেটা আমি নিজ চোখে অবলোকন করব। আহ! কি প্রশান্তি লাগবে। কিন্তু তার কথাগুলো অধরাই থেকে গেলো, এরআগেই তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। তবে তাঁর স্বপ্নের সেই মসজিদে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা নামাজ আদায় করবে, ধর্মের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করবে এতে তিনি কবরে থেকেও সওয়াবের অংশীদার হবেন এমনটাই বলছেন মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর ভক্তরা।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র পাশে প্রায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই দৃষ্টিনন্দন উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র অবস্থিত। সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলে যে কারোরই চোখে পড়বে সাদা উঁচু মিনার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মসজিদটি।
জানা যায়, নির্মাণাধীন মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল স্থানীয় সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর উপস্থিতিতে তিনতলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যেই তিনতলা ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ১২ কোটি ৯৭ লক্ষ ২১ হাজার টাকা ব্যয় হয় মসজিদটি নির্মাণে।
প্রায় ৪৩ শতক (১৮,৭০০ বর্গফুট) ভূমির উপর নির্মিত উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নিচতলায় ১৫ হাজার বর্গফুটে রয়েছে ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আছে ডাইনিং রুম, প্রতিবন্ধী কর্ণার, মরদেহ গোসলের কক্ষ, জেনারেটর রুম, অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য নামাজের কক্ষ, গাড়ি পার্কিং, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বুক সেলস সেন্টার ও ওজুখানা।
দ্বিতীয়তলায় মূল নামাজ কক্ষ, কনফারেন্স রুম, ওজুখানা, টয়লেট, উপ-পরিচালকের কক্ষ ও হিসাব কক্ষ রয়েছে। তৃতীয়তলায় পুরুষ ও মহিলাদের পৃথক নামাজ কক্ষ, মক্তব কক্ষ, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, ইমাম, মোয়াজ্জিন, খাদেম, শিক্ষক ও সাধারণ কর্মচারীদের কক্ষ, অতিথি কক্ষ। এছাড়াও মেহেরাব, সিঁড়ি ও একটি সুউচ্চ মিনার রয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের অংশ হিসেবে দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় এ মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত বিভাগ। দক্ষিণ সুরমা উপজেলা মডেল মসজিদটি উদ্বোধন হলে এলাকার মুসল্লিরা পাঁচওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায়ের পাশাপাশি ইসলামী জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন এমনটাই প্রত্যাশা উপজেলাবাসীর।