বড়লেখায় ইউপি কার্যালয়ে অগ্নিকান্ডটি কি তাহলে পরিকল্পিত ?
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ মে ২০২১, ১০:০৪ অপরাহ্ণ
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে অগ্নিকান্ডের ১৪ দিন পরও আগুন লাগার কারণ উদ্ঘাটিত হয়নি।
রহস্যময় অগ্নিকান্ডের ঘটনা তদন্তে উপজেলা প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন গত ৩০ মে জমা দিলেও আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেননি। তাই প্রতিবেদনে ঘটনাটি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের পুনরায় তদন্তের সুপারিশ করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান সহকারী কমিশনার(ভুমি) নূসরাত লায়লা নীরা বলেন, বৈদ্যুতিক ত্রুটি, বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত অবশিষ্টাংশ এবং বজ্রপাতের কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়নি। ফলে ইউনিয়নে পরিকল্পিতভাবে কেউ আগুন ধরিয়েছে কি-না তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছে। অপরদিকে জেলা প্রশাসনের গঠিত সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি অগ্নিকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করছে।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ এপ্রিল সকালে উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ভবনে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সেমিপাকা ৫টি কক্ষ পুড়ে যায়।
ওইদিন বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল।
ঘটনার দিন জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক তানিয়া সুলতানাকে আহবায়ক এবং জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার মো. রুহুল আমীনকে সদস্য সচিব করে সাত সদস্যবিশিষ্ট পৃথক আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
এদিকে, উপজেলা প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর জনমনে প্রশ্ন ওঠে তাহলে কি পরিকল্পিতভাবে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আগুন লাগানো হয়েছিল?
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ‘যেদিন ইউনিয়নে আগুন লেগেছে সেদিন থেকে আমাদের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। একটি ইউনিয়ন আগুন লেগে মূহূর্তেই তা পুড়ে গেল কিভাবে। এটি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। তাহলে ইউনিয়নে আগুন ধরলো কীভাবে। নাকি কেউ পরিকল্পিতভাবে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে?’
দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিন সোমবার মুঠোফোনে বলেন, ‘ঘটনার দিন সকালে আমি বাড়িতে ঘুমিয়েছিলাম। সকাল আটটার দিকে বড়লেখা থানার ওসি মৌলভীবাজারে যাওয়ার সময় ইউনিয়ন থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন। তিনি বিষয়টি ফোনে জানান। পরে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। খবর পেয়ে আমি দ্রæত এসে দেখি ইউনিয়ন কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। রাতে গ্রাম পুলিশের একজন পাহারায় ছিলেন। তিনি সকাল সাতটার দিকে বাড়িতে যান। এরপর হয়তো আগুন লেগেছে। তবে কীভাবে আগুন লেগেছে তা বলতে পারবো না। ’
তাহলে পরিকল্পিতভাবে কেউ আগুন দিয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক বলতে পারছি না। যেহেতু জেলা প্রশাসতের গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনাটি তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে তারাই বলতে পারবেন আসলে কীভাবে সেখানে আগুন লেগেছে।’