মৌলভীবাজারে তাপদাহের পর বৃষ্টির শুরুতে চা শিল্পাঞ্চলে স্বস্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ মে ২০২১, ১২:৪৭ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, নিজস্ব প্রতিবেদক:
তীব্র খরতাপের কবলে পড়ে সিলেটসহ মৌলভীবাজারের চা শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকার চা গাছের কুঁড়ি ও পাতা অনেকটা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। চা গাছগুলোও যেন পানির জন্য হাহাকার করছিলো।
তাপদাহের পর বৃষ্টির শুরুতে চা শিল্পাঞ্চলে স্বস্তি নেমে এসেছে। গত শনিবার ১৫.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পর রোববার(২ মে) দফায় দফায় মোট ২৯.৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পর চা গাছগুলোতে যেন যৌবনের ছোঁয়া লেগেছে। কুঁড়ি ও পাতা ফিরে পেয়েছে নতুন জীবন।
দু’দিনের ধারাবাহিক বৃষ্টিপাতে চা গাছগুলি যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। তাপদাহ থেকে রক্ষা করতে অধিকাংশ বাগানে সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে চা গাছে পানি ছিটানো হলেও এক্ষেত্রে বৃষ্টির কোন বিকল্প নেই বলে জানান চা বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা জানান, প্রতি বছর চা গাছগুলো ছেঁটে ফেলা হয়। এরপর চলে অপেক্ষার পালা। সঠিক সময়ে বৃষ্টিপাতের ফলে শাখা প্রশাখায় যেমন নতুন কুঁড়ি গজায় তেমনী বৃষ্টির ফলে রোপণ করা নতুন চারাগুলোও (ইয়াং টি) তরতাজা হয়ে বেড়ে ওঠে।
বাংলাদেশ টি এসোসিয়েশন সিলেট ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী বলেন, দীর্ঘ খরায় গতকালের বৃষ্টির পর থেকে আমরা আশার আলো দেখছি। নিস্তেজ হওয়া কড়িগুলো সতেজ হয়ে উঠছে। গাছে গাছে সবুজ পাতা গজাবে। আমাদের চা শ্রমিকরাও মনের আনন্দে চায়ের পাতা-কুঁড়ি আহরণ করবে। তিনি আরো বলেন, এমন বৃষ্টিপাতে চায়ের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী বলেন, এই বৃষ্টির জন্যই আমরা অপেক্ষায় ছিলাম। প্রচন্ড খরতাপের মধ্যে এই বৃষ্টি চা শিল্পের জন্য আশীর্বাদ সরূপ।
তিনি আরো বলেন, এমন তাপদাহ অব্যাহত থাকলে চা গাছ নিস্তেজ হয়ে মারাই যেত। এবং চারাগাছ (ইয়াং টি) গুলোকে আর বাচাঁনো যেত না।
বৃষ্টিপাতের বিষয়ে জানতে চাইলে ফিনলে টি কোম্পানির চিফ অপারেটিং অফিসার তাহসিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, তাপমাত্রা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল। এমন খরায় চা গাছের জীবন চক্র থমকে দাঁড়ায়। অতি তাপে ও অনাবৃষ্টিতে পাতা ও কুঁড়ির স্বাভাবিক বৃদ্ধি লোপ পায়। বিশেষ করে চারা গাছ (ইয়াং টি) অত্যন্ত দূর্বল হয়ে পড়ে। এভাবে বৃষ্টির ধারা অব্যাহত থাকলে চায়ের উৎপাদন স্বাভাবিক গতিতে ফিরে আসবে। ফলে আমাদের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হবে।