ওসমানী হাসপাতালের ওয়ার্ড মাষ্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে ধূম্রজাল
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:০০:২৮,অপরাহ্ন ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাষ্টার মোঃ রওশন হাবিবের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
রওশন হাবিবের বিরুদ্ধে দাঁড় কারানো অভিযোগকারিনী হাসপাতালে অস্থায়ীভাবে কর্মরত বুশরা প্রাইভেট সিকিউরিটি লিমিটেডের কর্মী রূপা খানমের সাথে গত ১৩ ফেব্রæয়ারি সরেজমিনে সাক্ষাতে কথা হলে তিনি কোন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেননি। শুধু থানায় অভিযোগের কথা স্বীকার করেছেন।
ওয়ার্ড মাষ্টার রওশন হাবিবের সাথে সাক্ষাতে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উক্ত অভিযোগের সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। তিনি বলেন অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। রওশন বলেন, রূপা খানমের সাথে তার পূর্ব পরিচয় নেই। গত ৯ ফেব্রæয়ারি রাতে জানতে পারেন রূপা খানম তার বিরুদ্ধে সিলেট কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। ডায়েরী নং- ৮৩৪। কিন্তু কেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন সে বিষয়ে কিছুই জানেন না রওশন।
গত ১০ ফেব্রæয়ারি রওশন হাবিব তার বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ সম্পর্কে হাসপাতালের পরিচালককে অবগত করেন।
কোতোয়ালী থানায় দায়েরকৃত সাধারণ ডায়েরীর তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস.আই জয়নাল বিষয়টি তদন্ত করছেন। গত ৩ দিন আগে তদন্তকারী কর্মকর্তা জয়নাল ওয়ার্ড মাষ্টার রওশন হাবিবের কক্ষে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
জিজ্ঞাসাবাদকালে রওশন হাবিব তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বলেন, এই অভিযোগটি সাজানো ও মিথ্যা। কারণ হিসেবে রওশন বলেন, ঘটনার দিন বুশরা প্রাইভেট সিকিউরিটি লিমিটেডের সুপার ভাইজার জামিল তার কক্ষে বসা ছিলেন। জামিলের অধিনস্থ কর্মচারী রূপা খানম হাসপাতালে কাজ করেন। ঘটনার সময় সুপার ভাইজার জামিল ফোন করে রূপাকে ডেকে আনেন রওশনের কক্ষের সামনে। তখন রূপা খানম রওশন হাবিবের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় জামিল রূপাকে ডিউটির সময় বলে দেন। রূপা বিষয়টি অবগত হয়ে সেখান থেকে চলে যান। পরে রওশন হাবিবের বিরুদ্ধে রূপা খানম থানায় কুরুচিপূর্ণ অভিযোগ দায়ের করেন। রূপা খানমের সাধারণ ডায়েরীতে সাক্ষী হিসেবে সুপারভাইজার জামিলের নাম লেখা হয়েছে।
ঘটনার দিন রওশন হাবিবের সাথে রূপা খানমের কোন কথাই হয়নি। রওশন হাবিবের কল লিস্টে রূপা খানমের সাথে যোগাযোগের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের এক কর্মচারী বলেন, এমন ধরনের ঘটনা ঘটলে প্রথমে হাসপাতাল প্রশাসনকে জানাতে হয়। কিন্তু রূপা হাসপাতাল প্রশাসনকে না জানিয়ে পাশকাটিয়ে হীন উদ্দেশ্যে কোতোয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন।
বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। কোন প্রকার তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই রূপা কার ইন্দনে থানায় ডায়েরী করেছেন, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে।
গত ১৪ ফেব্রæয়ারি রোববার হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস.আই জয়নালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে রওশনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। অভিযোগটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে আদালতের অনুমতি প্রয়োজন। সেই অনুমতি পাওয়া গেলে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘটনাটির তদন্ত করে সততা উৎঘাটন করা সম্ভব হবে।
ওসমানী হাসপাতালের উপ-পরিচালক (ডিডি) ডাঃ হিমাংশু লাল রায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যকে বলেন, ঘটনার বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে নারাজ। এগুলো সত্য-মিথ্যা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেননা। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রূপা খানম ঘটনার সম্মুখীন হলে হাসপাতাল প্রশাসনকে জানাবে। কিন্তু রূপা তা করেনি। এ বিষয়ে রওশন হাবিবও আমাকে কিছুই জানায়নি।
সুপারভাইজার জামিলের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার দিন তিনি ওয়ার্ড মাষ্টার রওশন হাবিবের কক্ষে ছিলেন। পারিবারিক সমস্যা ও যাতায়াতের অসুবিধার কারণে রূপা খানমের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সুপারভাইজার জামিল তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে রূপাকে ডেকে এনে তার ডিউটি দৈনিক ৮ ঘন্টার পরিবর্তে ৭ ঘন্টা ডিউটি নির্ধারণ করা হয়ে বলে জানিয়ে দিলে, রূপা দরজার সামন থেকেই চলে যান। রওশন হাবিব এ সময় রূপার সাথে কোন কথা বলেননি। রূপা সাধারণ ডায়েরীতে তার নাম সাক্ষী হিসেবে দিয়েছেন। যা তিনি পরে জানতে পারেন।
সুপারভাইজার জামিল জানান, হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস.আই জয়নাল প্রাথমিক তদন্তের অংশ হিসেবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, এ ধরনের ঘটনা ওই দিন ঘটেনি। সাধারণ ডায়েরীর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।