ভেঙে যাচ্ছে স্বপ্ননীড়ের স্বপ্ন, তালিকা থেকে বাদ পড়ছে শতাধিক পরিবার
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১২:৫২ অপরাহ্ণ
বিপ্লব রায়, শাল্লা:
অসহায় ও দারিদ্রতার মাঝে কাটছে প্রতিটি পরিবার। দেনা ও সুদের টাকা নিয়ে চলে তাদের সংসার। এমন দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে সংগ্রামী জীবন চালাচ্ছেন শাল্লা হাওরপাড়ের মানুষ। ভিটেমাটি না থাকায় স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে অল্প টাকার ভাড়ার ঝুপড়ি ঘরেই কাটছে জীবন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী সরকারের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় ঘরের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন উপজেলার দরিদ্র ১৫৮১টি পরিবার। এমন খুশির খবরে যেন নতুন জীবন পান তারা। উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে প্রতিটি বাড়িতে পৌছে যায় নির্মাণ কাজের মালামাল। আর এসব মালামাল যাওয়ার প্রেক্ষিতেই এই অসহায় পরিবারগুলো মহাজনদের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে খাঁস জমিতে মাটি ভরাট করেন। এমনকি মালামাল নিতেও ৭/৮ হাজার টাকা খরচ করেন তারা। তবে স্বপ্ননীড়ের স্বপ্ন দেখার মধ্যেই বাতিল হয়ে যাচ্ছে তালিকার শতাধিক পরিবার।
৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন ৯ উপজেলার ইউএনওসহ মোট ২০ জন ম্যাজিট্রেট নিয়ে আশ্রয়ন প্রকল্পের তদন্তে যান। এসময় তিনি কাজের কিছু অসঙ্গতি দেখতে পান। পরে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন প্রায় ২০০ ঘরের নাম তালিকা থেকে বাতিল করার জন্য। আর এসব খবর ছড়িয়ে পড়ে তালিকাভুক্ত সুবিধাভোগীদের মাঝে। তাই বাতিল হওয়া সকল সুবিধাভোগী মিলিত হয়ে ইউএনও অফিসের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোকজন এসে এই বিক্ষোভে শরিক করে। এসময় তারা বলেন, ‘সুদে টাকা এনে মাটি ভরাট করেছি। এছাড়াও মালামাল নিতে ৭/৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন আমাদেরকে ঘরের তালিকা থেকে বাতিল করে দিচ্ছে। তাহলে আমাদের এই খরচ হওয়া টাকাগুলো কে দেবে? দিনাতিপাত করে সংসার চালাচ্ছি এর মাঝে আমাদের সাথে এমন অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে কেন? প্রয়োজনে জীবন দেবে, তবুও মালামাল ফেরত নিতে দেন না।’
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মোক্তাদির হোসেন বিক্ষোভকারীদের সামনে গিয়ে আশ্বস্থ করেন- তাদেরকে ঘরের তালিকা থেকে বাতিল না করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করবেন বলে।
এব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মোক্তাদির হোসেন বলেন, সরজমিনে তদন্ত করে দেখেছি অনেক ঘরের ভিটায় নতুন মাটি। তাই এসব মাটিতে ঘর দেওয়া হলে ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া জায়গা সংক্রান্ত কোনো বিরোধ থাকলে সেগুলো বাতিল করা হবে। তাই সবকিছু বিবেচনা করা সরজমিন তদন্তে গিয়ে বাতিল হওয়া ঘরের তালিকা করা হবে।সূত্র-একাত্তরের কথা