এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ : ফের পেছালো সাক্ষ্য গ্রহণ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১:২৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেটের মুরারি চাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় আজও সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে হাই কোর্টে মামলার বাদীর করা আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ নির্ধারিত তারিখেও সাক্ষ্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি ও ২৪ জানুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের নির্ধারিত তারিখেও সাক্ষীরা হাজির না হওয়ায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। এরই মধ্যে বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে হাই কোর্টে মামলার বাদী আবেদন করেছেন।
এদিকে বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে করা আবেদনের ওপর আজ রোববার শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন হাই কোর্ট। গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫২৬ ধারায় হাই কোর্টে আবেদন করেন এই মামলার বাদী। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম লিটন।
এ ব্যাপারে বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাদী ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা থেকে বিচারিক আদালত পরিবর্তনের আবেদন করেছেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৫২৬ ধারায় আদালত পরিবর্তনের এই আবেদন করা হয়। আবেদনে সিলেটের অন্য কোনো ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য মামলাটি যেন বদলির আদেশ দেয়া হয়- সে প্রার্থনা করা হয়েছে। রোববার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু হাই কোর্টে বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে আবেদনের শুনানি শেষে হাই কোর্টের গঠিত বেঞ্চ আজ আদেশ দিবেন।’
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে আসেন ধর্ষণের শিকার তরুণী। এ সময় ক্যাম্পাস থেকে কয়েকজন ছাত্র ওই তরুণীকে স্বামীসহ কলেজ ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা স্বামীকে বেঁধে মারধর এবং গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী সেদিন (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় এজাহার নামীয় আসামি করা হয়েছে ৬ জনকে। সেই সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলেন- এম. সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক আহমদ, অর্জুন লঙ্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। এরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। আসামিদের মধ্যে তারেক ও রবিউল বহিরাগত, বাকিরা এমসি কলেজের ছাত্র। এরই মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ৩ ডিসেম্বর সাইফুরসহ ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। পরে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোহিতুল হক চৌধুরী অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। এ অবস্থায় মামলাটি আদালত পরিবর্তনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন জানান মামলার বাদী।