সিলেটে আসছে ভ্যাকসিন: প্রস্তুত ২৫ টিম, নগরে ১২টি ও উপজেলা পর্যায়ে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে দেয়া হবে টিকা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ জানুয়ারি ২০২১, ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
সিলেটে প্রথম ধাপে ২৩ হাজার করোনা ভ্যাকসিন আসছে আজ শুক্রবার। সিলেটে আসা ভ্যাকসিন গ্রহণ করবেন সিভিল সার্জন। এরপর ভ্যাকসিনগুলো বন্টন করে দেওয়া হবে সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে।
সম্মুখসারির যোদ্ধাদের টিকাদানে ২৫টি টিম করা হয়েছে। প্রতিটি টিমে দুই জন করে স্বাস্থ্যকর্মী ও চারজন করে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধানস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, করোনার টিকাদানের জন্য ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে ৪টি, সদর হাসপাতালে ৮টি এবং পুলিশ লাইন হাসপাতালে ১টি টিম কাজ করবে। এছাড়াও আরো ১০টি টিম প্রস্তুত রাখা হবে। পাশাপাশি টিকাদান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে প্রতিটি হাসপাতালে একটি করে মেডিকেল টিম থাকবে। তবে, করোনা ভ্যাকসিন কোনদিন সিলেট আসবে তা বলতে পারেননি সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের সহকারি পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, শুক্রবার নয়, শনিবার (৩০ জানুয়ারি) করোনা ভ্যাকসিন আসতে পারে।
প্রথম ধাপে ২৩ হাজার করোনা ভ্যাকসিন আসলেও ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই সিলেটে আরো ভ্যাকসিন আসার কথা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে ১০ লাখের বেশি ভ্যাকসিন পাবে সিলেট বিভাগ। আর টিকাদান কার্যক্রমের সুষ্টুভাবে সম্পন্নে সিলেটে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নগর এলাকায় ১২টি কেন্দ্রে এবং উপজেলা পর্যায়ে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে।
এরইমধ্যে জেলা ও মহানগর এলাকার জন্যপৃথক দু’টি কমিটিও করা হয়েছে। নগর এলাকায় ২২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক সিলেট করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং সদস্য সচিব প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম। কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সিলেটের উপ পরিচালক। জেলা পর্যায়ে ৮ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক জেলা প্রশাসক এম কাজি এমদাদুল ইসলাম এবং সদস্য সচিব হিসেবে আছেন সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রাথমিকভাবে আসা ভ্যাকসিন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাবেন ফ্রান্টলাইনার যুদ্ধাসহ ১৫ ক্যাটাগরিতে। এরমধ্যে সরকারি হাসপাতালে কভি-১৯ চিকিৎসায় জড়িত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী, বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা ও বীরঙ্গনা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, সরকারি সচিবালয়ে, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারি, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মী, পৌর-সিটি করপোরেশনের সম্মুখসারির কর্মকর্তা-কর্মচারি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারি, বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস’র কর্মকর্তা-কর্মচারি, কবর খনন ও মৃত ব্যক্তির সৎকারকারীরা এর আওতায় রয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি কার্টুনে ১২শ’করে ভ্যাকিসিন থাকছে। সে হিসেবে প্রাথমিক অবস্থায় ১৯ কার্টুনে ২২ হাজার ৮০০ ভ্যাকসিন আসছে। অবশ্য প্রথম চালানে সিলেট বিভাগে আসা ৩৭ কার্টুন ভ্যাকসিন আসার কথা রয়েছে। এরমধ্যে ৫ কার্টুন মৌলভীবাজারে, ৬ কার্টুন হবিগঞ্জে ও ৭ কার্টুন যাবে সুনামগঞ্জে। বাকীগুলো সিলেট জেলার জন্য থাকবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সিলেটে আসা ভ্যাকসিন সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সংরক্ষণ করা হবে। সেখানে সংরক্ষণাগারে ২২৪ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ফ্রিজে টিকা রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। সিলেটে আসা ভ্যাকসিনের জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্প্রসারিত টিকাদান অন প্রোগ্রাম (ইপিআই) টিকা রাখার জন্য এটি আদর্শ ভবন। এগুলো পুরো জেলায় এখান থেকে বিতরণ করা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডিস্ট্রিবিউশন পরিকল্পনায় দেখা গেছে, সিলেট বিভাগে ১০ লাখ ৩২ হাজার এক জনকে টিকা দেওয়া হবে। এছাড়া ঢাকা বিভাগে ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪৫ জনকে, চট্রগ্রাম বিভাগে ২৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৩ জনকে, রাজশাহী বিভাগে ১৯ লাখ ২৪ হাজার ৯২২ জনকে, রংপুর বিভাগে ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৯ জনকে, খুলনায় ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৬৪৬ জনকে এবং বরিশাল বিভাগে ৮লাখ ৬৬ হাজার ৯৯৪ জন টিকা পাবেন।