গোলাপগঞ্জে নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিনে প্রতিশ্রুতির বন্যা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ জানুয়ারি ২০২১, ৮:৩২ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
চতুর্থ ধাপে ৩০ জানুয়ারি বহুল কাঙ্খিত গোলাপগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন। চায়ের দোকানে, আড্ডার ফাঁকে চলছে যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের মতামত। সাদা-কালো পোস্টার-ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো পৌরপশহর। আর নির্বাচনকে সামনে রেখে শেষ হয়েছে মেয়র-কাউন্সিলরদের শেষ দিনের প্রচার-প্রচারণা।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় পৌর শহরের চৌমুহনীতে প্রথমেই বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহীন, বিকাল ৪টায় সদ্য দল থেকে বহিস্কৃত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাকারিয়া আহমদ পাপলুর (মোবাইল প্রতীকের), বিকাল ৫টায় পৌর এলাকার স্বরস্বতী গ্রামে বর্তমান মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেলের (জগ প্রতীকের), সন্ধ্যা ৬টায় পৌর শহরের চৌমুহনীতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মো. রুহেল আহমদের সমর্থনে শেষ নির্বাচনী পথসভা ও গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে শেষ নির্বাচনী জনসভায় পৌরবাসীকে প্রতিশ্রুতির বন্যায় ভাসিয়েছেন ৪ মেয়র প্রার্থী ও ৯টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর-সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলররা।
বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহীন পৌরবাসীকে প্রতিশ্রুতির বন্যায় ভাসিয়ে বলেন, বিগত দিনে যে তিনজন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন তারা পৌরসভার উন্নয়নে কতটুকু ভূমিকা রেখেছেন তা সবার জানা আছে। আগামী নির্বাচনে আমি বিজয়ী হলে পৌরসভায় একটি হসপিটাল, একটি প্রাথমিক স্কুল-হাই স্কুল নির্মাণ করব, গোরস্থান করব, একটি এ্যাম্বুলেন্স করব যেটা ২৪ ঘন্টা বিনামূল্যে পৌরসভার নাগরিকদের জন্য চলবে।
তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ী-শ্রমিকদের জন্য একটি পাবলিক টয়লেট করব। যাত্রী ছাউনি ভেঙে পাঁচতলা ভবন করব। যাতে সবাই এখানে বসে আরাম করতে পারেন। ৫০ টাকার জন্মনিবন্ধন বিনামূল্যে নিজের টাকা দিয়ে করে দিব। এরকম আরো বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি তিনি ব্যক্ত করেন।
সদ্য দল থেকে বহিস্কৃত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী, বিগত উপ-নির্বাচনসহ দুই নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভরাডুবির পরও সাবেক মেয়র মোবাইল প্রতীকের প্রার্থী জাকারিয়া আহমদ পাপলু প্রতিশ্রুতির কমতি না রেখে পৌরবাসীর উদ্দেশ্য তার বক্তব্যে বলেন, আমি যখন ২০০২ সালে বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই তখন এক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। আমি যখন পৌরসভাকে একটি ভাল অবস্থানে পৌঁছাতে শুরু করি তখনই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। আমাকে নির্বাচনে পরাজিত করতে একদল আমার বিপক্ষে লেগে যায়। আমার সময়কালে পৌরসভাকে যতটুকু উন্নয়নের দ্বারপ্রান্তে নিয়েছিলাম তার ছিটেফোঁটাও আমার পর কোন প্রার্থী করতে পারেন নি।
তিনি আরো বলেন, আমি পৌরবাসীকে আধুনিক ও মানসম্মত পৌরসভা উপহার দিতে বিগত সময় কাজ করেছি। গোলাপগঞ্জ পৌরসভাকে সি গ্রেড থেকে আমি এ গ্রেডে উত্তীর্ণ করেছি। পরিকল্পনা অনুযায়ী রাস্তা নির্মাণ, রাস্তা প্রসস্তকরণ, ড্রেন নির্মাণ, সড়কবাতি ইত্যাদি কাজ করে আধুনিক শহর গড়ার চেস্টা করেছি। গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় এলাকাকে আলোকিত করতে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছি। সবার সহযোগিতায় উন্নত পৌরসভা গড়ে তুলতে কাজ করার কথা জানান তিনি। এর জন্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিও জানান।
বর্তমান মেয়র ও জগ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আমিনুল ইসলাম রাবেল বলেন, আমার দায়িত্বকালীন সময়ে কোন ওয়ার্ডের নাগরিকগণ বৈষম্যের শিকার হননি। এবারও নির্বাচিত হলে আগামীতেও সমভাবে সকল ওয়ার্ডে উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে যাব।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নৌকার প্রার্থী মো. রুহেল আহমদ নতুন প্রার্থী হিসেবে অনেকগুলো উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি পৌরবাসীকে দিয়ে বলেন, নতুন প্রার্থী হিসেবে গোলাপগঞ্জ পৌরসভাকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে। আমি আপনাদের ভোটে মেয়র নির্বাচিত হয়ে পৌরসভাকে একটি আধুনিক পৌরসভা হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। পৌরসভা ১ গ্রেডের হলেও বাস্তবে তা একেবারেই ভিন্ন। আমি নির্বাচিত হয়ে সবাইকে নিয়ে উন্নয়ন করতে চাই। এরকম অনেক প্রতিশ্রুতির বন্যায় ভাসিয়েছেন পৌরসভার জনগণকে।
মেয়র প্রার্থীদের নির্বাচনী শেষ জনসভায় জেলা নেতৃবৃন্দ, দলীয় নেতা-কর্মী, সমর্থক ও ভোটারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে মেয়র প্রার্থীদের মত কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরাও তাদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শেষ করেছেন।