ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই সিলেটে আসছে ভ্যাকসিন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ১১:৩৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই সিলেটে আসছে করোনা ভ্যাকসিন। পর্যায়ক্রমে ১০ লাখের বেশি ভ্যাকসিন পাবে সিলেট বিভাগ।
আর টিকাদান কার্যক্রমের সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নে সিলেটে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নগর এলাকায় ১২টি কেন্দ্রে এবং উপজেলা পর্যায়ে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে।
এরইমধ্যে জেলা ও মহানগর এলাকার জন্যপৃথক দুটি কমিটিও করা হয়েছে। নগর এলাকায় ২২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক সিলেট করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং সদস্য সচিব প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম।
কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সিলেটের উপ পরিচালক।
জেলা পর্যায়ে করা ৮ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন জেলা প্রশাসক এম কাজি এমদাদুল ইসলাম এবং সদস্য সচিব হিসেবে আছেন সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রাথমিকভাবে আসা ভ্যাকসিন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাবেন ফ্রান্টলাইনার যুদ্ধাসহ ১৫ ক্যাটাগরিতে। এরমধ্যে সরকারি হাসপাতালে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় জড়িত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী, বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা ও বীরঙ্গনা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, সরকারি সচিবালয়ে, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, পৌর-সিটি করপোরেশনের সম্মুখসারির কর্মকর্তা-কর্মচারী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, কবরখনন ও মৃত ব্যক্তির সৎকারকারীরা রয়েছেন এর আওতায়।
টিকাদানে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে ৪টি ও সদর হাসপাতালে ৮টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। টিকাদানে কেন্দ্র প্রতি থাকবেন ২ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও ৪ জন স্বেচ্ছাসেবক। টিকাদান পরবর্তী পর্যবেক্ষণের জন্য ৭ সদস্যের মেডিক্যাল টিম থাকবে। ২৭ তারিখ প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর টিকা আসবে সিলেটে।
সিলেটের বিভাগীয় স্বাস্থ্য উপ পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, সিলেট বিভাগের জন্য প্রাথমিক অবস্থায় ৩৭ কার্টন ভ্যাকসিন আসবে। প্রতি কার্টনে ১২শ করে ভ্যাকিসিন থাকছে। এরপর ৪ কার্টন বাড়তি আসবে। সে হিসেবে প্রথম পর্যায়ে ৪৯ হাজার ২শ ডোজ টিকা পাচ্ছে সিলেট।
তিনি বলেন, প্রথম চালানে সিলেট বিভাগে আসা ৩৭ কার্টন ভ্যাকসিনের মধ্যে ৫ কার্টন মৌলভীবাজারে, ৬ কার্টন হবিগঞ্জে ও ৭ কার্টন যাবে সুনামগঞ্জে। বাকিগুলো সিলেট জেলার জন্য থাকবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ২২৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ফ্রিজে টিকা রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। টিকা দানে প্রতিটি কেন্দ্রে ২জন স্বাস্থ্যকর্মী ও ৪ জন স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। টিকাদান পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে তার নেতৃত্বে চিকিৎসকের ৭ জনের একটি টিম থাকবে।
সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য কোনো চাহিদা পাঠানো হয়নি। সিলেটে প্রাথমিক অবস্থায় কতগুলো ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, তা এখনো জানা নেই। জেলা ও উপজেলার জন্য সিলেটে আসা ভ্যাকসিনের জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্প্রসারিত টিকাদান অন প্রোগ্রাম ( ইপিআই) ভবন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এখানে সব ধরনের টিকা রাখা হয়। টিকা রাখার জন্য এটি আদর্শ ভবন।
সূত্র জানায়, সোমবার (২৫ জানুয়ারি) ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে দেশে এসেছে প্রায় ৫০ লাখ ডোজ করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন। এরমধ্যে প্রায় ৪৫ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন আসবে সিলেট বিভাগে। ৪/৫ দিনের মধ্যে এই ভ্যাকসিন এসে সিলেটে পৌঁছার কথা রয়েছে। এগুলো বিতরণ করা হবে পুরো বিভাগে। তবে প্রথম পর্যায়ে সারা দেশের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ভ্যাকসিন পাবে এ অঞ্চলের মানুষ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডিস্ট্রিবিউশন পরিকল্পনায় দেখা গেছে, সিলেট বিভাগে ১০ লাখ ৩২ হাজার এক জনকে টিকা দেওয়া হবে। এছাড়া ঢাকা বিভাগে ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪৫ জনকে, চট্রগ্রাম বিভাগে ২৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৩ জনকে, রাজশাহী বিভাগে ১৯ লাখ ২৪ হাজার ৯২২ জনকে, রংপুর বিভাগে ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৯ জনকে, খুলনায় ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৬৪৬ জনকে এবং বরিশাল বিভাগে ৮লাখ ৬৬ হাজার ৯৯৪ জন টিকা পাবেন।