হাকালুকির হাওরখাল বিল ফিসিং প্রতিবন্ধকতায় ইজারাদার সমিতি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ৬:২৫ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, নিজস্ব প্রতিবেদক:
হাকালুকির গোটাউরা হাওরখাল গ্রুপ (বদ্দ) জলমহালের খাজনাসহ ৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও ভিত্তিহীন অভিযোগে ফিসিং করতে পারছে না ইজারাদার মৎস্যজীবি সমিতি। মামলার বেড়াজালে মাছ ধরায় উদ্দেশ্যমুলক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিতে ইজারাদার মাধবকুন্ড মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সদস্যরা দিশেহারা। সরেজমিনে জলমহাল ঘুরে সোনারবাংলা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মৎস্যজীবি সমিতির আনিত অভিযোগের সত্যতা মিলেনি।
জানা গেছে, হাকালুকি হাওরের প্রায় ২ হাজার একরের সর্ববৃহৎ জলমহালটি ১৪২৫-১৪৩০ বাংলা সনের জন্য একক আবেদনকারী হিসেবে ভুমি মন্ত্রণালয় হতে উন্নয়ন প্রকল্পে ইজারা নেয় বড়লেখার মাধবকুন্ড মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি নামক একটি মৎস্যজীবি সমিতি। সরকারের সাথে চুক্তি অনুযায়ী ১৪২৫-২৬ ও ২৭ সনের ইজারা মূল্য, ভ্যাট ও জামানতসহ প্রায় সোয়া ৪ কোটি টাকা রাজস্ব পরিশোধ করে উক্ত সমিতি। এছাড়াও তারা উক্ত জলমহালের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষন খাতে আরো প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। শর্তানুযায়ী মাধবকুন্ড মৎস্যজীবি সমিতি চলিত সনে মাছ ধরার (ফিসিং) কথা। চুক্তিমোতাবেক মাধবকুন্ড মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি যখন বিল ফিসিংয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখনই সোনারবাংলা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মৎস্যজীবি সমিতি নানা অপতৎপরতা শুরু করে।
ইজারাদার মাধবকুন্ড মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি সালাম আহমদ, সাধারণ সম্পাদক শিপার আহমদ, কোষাধ্যক্ষ হেলাল মিয়া প্রমুখ জানান, আমাদের সমিতি গোটাউরা হাওরখাল (বদ্দ) জলমহালটি ৬ বছরের জন্য লীজ নিয়েছে। সমিতির সদস্যরা ধারদেনা করে খাজনা পরিশোধ করেছেন। সরকারী রাজস্বসহ প্রায় সোয়া ৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফিসিংয়ের অফিসিয়েল কার্যক্রম চলাকালে সোনারবাংলা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি আমাদের সমিতির বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমুলক মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। তারা মামলা-মোকদ্দমার বেড়াজালে এ জলমহালের মাছ লুটের অপচেষ্টায় লিপ্ত। স্বার্থান্বেষীদের ইশারায় ভুয়া অভিযোগ তুলে আমাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে। আমরা নাকি হাওরখাল বিলের বাধ কেটে পানি কমিয়ে অবৈধভাবে মাছ আহরন করছি। তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে বিভ্রান্ত করে আমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্থ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী বৈধ পন্থায় আমরা মাছ ধরতে চাই। ৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও মাছ ধরতে না পারলে সমিতির সদস্যদের বাড়িঘর বিক্রি করেও ঋণ পরিশোধ সম্ভব নয়।
ভুমি মন্ত্রণালয়ের সায়রাত-১ অধিশাখার উপ-সচিব তাজুল ইসলাম মিয়া জানান, গোটাউরা হাওরখাল গ্রুপ (বদ্দ) জলমহালের ওপর সরকার পক্ষের আপীল মামলায় আদালত দখল হিসেবে স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন। যেহেতু মাধবকুন্ড মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি খাজনা পরিশোধ করে জলমহালের দখলে রয়েছে, সেহেতু তাদেরকে মাছ ধরা থেকে বারিত রাখার মন্ত্রণালয়ের আইনগত কোন সুযোগ নেই।
গত শুক্রবার সরেজমিনে গোটাউরা হাওরখাল গ্রুপ (বদ্দ) জলমহাল ঘুরে কোথাও বাধ কেটে পানি কমানোর কিংবা অবৈধভাবে মাছ ধরার আলামত পাওয়া যায়নি। জলমহাল জুড়ে মাছের অবাধ বিচরনের সরঞ্জামাদি ও বিলের চতুর্দিকে উন্নয়ন স্কিমে নির্মিত বাধ অক্ষত থাকতে দেখা গেছে। সোনারবাংলা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দের মাছ লুটের ও বাধ কাটার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।