দূর্গা দেবীর অন্যরুপ জগদ্ধাত্রী পূজার ব্যাপ্তি সম্পর্কে কী বলে শাস্ত্র
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ অক্টোবর ২০২০, ৫:১২ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব রতন:
জগদ্ধাত্রী পূজা করার প্রকৃত নিয়ম হলো একদিনে। সেটা নবমী তিথিতে। একদিনে না পারলে তিন দিন ধরে হয় পূজা। বর্তমানে দীর্ঘ সময় ধরে আনন্দের জোয়ারে গা ভাসাতেই মানুষ এটিকে তিন দিনের পূজা করে নিয়েছে। চৈতন্য সমসাময়িক স্মার্তপন্ডিত রঘুনন্দন তাঁর ‘দুর্গোৎসতত্তম’ গ্রন্থে বলেছেন শুক্লাকার্তিকী নবমী তিথিতে প্রাতে সাত্ত্বিকী, মধ্যাহ্নে রাজসিকী ও অপরাহ্নে তামসিকী এই ত্রিকালীন পূজাই জগদ্ধাত্রী পূজা। পূজায় বসতে হবে অরুণোদয় কালে। একই আসনে বসে সূর্যাস্তের আগে পর্যন্ত দফায় দফায় এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে পূজা করে যেতে হবে। পূজা করতে হবে তিন বার তিন কালের। কারণ, জগদ্ধাত্রী পূজা ত্রৈকালীন পূজা।
বৃত্রাসুরের অত্যাচারে স্বর্গরাজ্য ও দেবতাদের বাঁচাতে দেবরাজ ইন্দ্র দেবী জগদ্ধাত্রীর প্রথম আরাধনা করেন। দেবী দুর্গার রূপভেদে প্রথম কার্ত্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে দেবী জগদ্ধাত্রীর আরাধনা করে দেবশত্রু বৃত্রাসুরকে বিনাশ করেন দেবরাজ ইন্দ্র। সেটি ছিল একদিনের পূজা। শাস্ত্রে রয়েছে এই তিথিতে দেবী দুর্গার জগদ্ধাত্রী মূর্তিকে পূজা করলে ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ, এই চতুরবর্গ লাভ হয়। জগদ্ধাত্রী তাই একদিনে নিষ্পাদ্য দুর্গাপূজা। জগদ্ধাত্রী পূজার বর্তমান যে জাঁকজমক তার রূপকার কৃষ্ণনগরের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র। কিন্তু তিনিও একদিনে নিষ্পাদ্য দুর্গাপূজা হিসেবের স্বপ্নে দেখা জগদ্ধাত্রী মূর্তির পূজা আরম্ভ করেছিলেন।
অবশ্য ‘নিগমকল্পসার’ ও ‘মায়াতন্ত্র’ গ্রন্থে কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী এই তিন তিথিতে তিন পূজা এবং দশমীতে বিসর্জন করার কথা বলা হয়েছে। সপ্তম্যাদি নবম্যান্তু পূজাকালমিতীরিতম। ত্রিদিনে ত্রিবিধা পূজা দশম্যাঞ্চ বিসর্জয়েৎ। তাই বর্তমানে দুই মতেই পূজা হয়। দুটোই দুই শাস্ত্র মতে সিদ্ধ।