ছাত্রাবাসে সাধারণ ছাত্রদেরকে নির্যাতন চালাতো সাইফুর-রনি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ৯:১২ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সাইফুর-রনি সিলেট এমসি কলেজের শিক্ষার্থী। কলেজে অধ্যয়নের জন্য দুইজনই উঠে ছাত্রাবাসে। ছাত্রাবাসে উঠার পর বেপরোয়া হয়ে শুরু করে তাদের অপরাধ মূলক কর্মকান্ড। এ দুইজনের কর্মকান্ডে বিভ্রান্ত ছিলেন অধ্যক্ষ, অধ্যাপক, হোস্টেল সুপার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তাদের এই সকল কাজে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক স্কুল বিষয়ক সম্পাদক হোসাইন আহমদ ও জেলা ছাত্রলীগের সদস্য নাজমুল ইসলাম। এমনই তথ্য নিশ্চিত করেছেন কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী ও সিলেট ছাত্রলীগের একাধিক নেতা এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাইফুর-রনি’র ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধু।
তারা জানান, সাইফুর-রনি মিলে ছাত্রাবাসে চালায় অর্থ বাণিজ্য। ওই দুইজন মিলে হোস্টেলে কক্ষ ভাড়া দিয়ে থাকার ব্যবস্থা করে দিবে বলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতি রুম বাবদ নিত ১০ হাজার টাকা করে।
সাধারণ ছাত্রদের কক্ষে উঠিয়ে দেয়ার পর পুনরায় মাস খানেকপর ওই শিক্ষার্থীদের মারপিট ছাত্রাবাসের কক্ষ থেকে বের করে অন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে উঠাতো।
কিন্তু তাতে ক্ষান্ত থাকেনি এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সাইফুর-রনি। ওই দুইজন এমসি কলেজের পুকুর, ছাত্রাবাসের পুকুরের মাছ তুলেও বিক্রি করেছে অনেকবার।
এ সকল কাজে ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতাদের সহযোগিতায় গ্যাং-এর মাধ্যমে সম্পাদন হতো। আর ওই গ্যাং দিয়ে কলেজ এবং ছাত্রাবাসে আধিপত্য ধরে রাখা, গ্রুপিং রাজনীতি এবং অন্য গ্রুপকে ঘায়েল করা হতো।
তাছাড়া ছিনতাই, অস্ত্রের মহড়া-প্রশিক্ষণ, নিরীহ শিক্ষার্থীদের ধরে নিয়ে নির্যাতন এবং গ্যাং র্যাপসহ নানা অপরাধ পরিচালনা করা হতো ছাত্রাবাসের ২০৫ নম্বর রুম থেকে।
গত শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে পুলিশ অভিযান চালায় ছাত্রাবাসের ২০৫ নম্বর কক্ষে। অভিযানে উদ্ধার হয় বন্দুক ও দেশিয় ধারালো অস্ত্র।এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে সাইফুরের নামে। তবে অস্ত্রের যোগানদাতা এখনও আড়ালে।
এদিকে, গত শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে ধর্ষনের ঘটনায় আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেছেন ধর্ষিতা গৃহবধূ।
আর ধর্ষণ ঘটনার মূল হোতা সাইফুর এবং অর্জুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সূত্র। তবে এখনও অধরা রয়েছে রনি, রবিউল, তারেক, মাসুম সহ গণধর্ষণ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামীরা।
অপরদিকে, গণধর্ষণ মামলার পলাতক থাকা আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সূত্র।